ছেলের আবদার মেটাতে গিয়ে প্রাণ গেলো মায়ের

একমাত্র ছেলে আরহাম (৬) তার মা তানজিনা এষার কাছে কাচ্চি খাবে বলে আবদার করেছিল। ছেলের আবদার মেটাতে গিয়েছিলেন বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয়। সঙ্গে ছিল আত্মীয়স্বজনেরা। সেখানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সন্তান ও সঙ্গে থাকা স্বজনদের বের করে দিতে পারলেও ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে মারা যান এষা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তানজিনা এষার মামাতো ভাই অ্যাডভোকেট নাজমুস সাকিব তুষ্টি।

তিনি জানান, তানজিনা এষা পিরোজপুরে লেখাপড়া শেষ করে ঢাকায় ইডেন কলেজে ভর্তি হন। সেখানের লেখাপড়া শেষে তার বিয়ে হয়। এষা তার স্বামী সন্তানকে নিয়ে রামপুরা এলাকায় বসবাস করতেন। এদিন কাচ্চি খেতে রেস্তোরাঁয় এষার সঙ্গে গিয়েছিল ছেলে আরহাম, খালাতো ভাই তানভীর মুজিব অভির স্ত্রী লামিয়া ও তার (লামিয়ার) ভাই আবির ও অভির দুই সন্তান নাবা ও আয়রা।

তিনি আরও জানান, হোটেলে আগুন লাগলে এষা তার ছেলে আরহামসহ অন্যদের বের করে দিয়ে নিজে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। তখন অন্য এক লোকও বের হওয়ার চেষ্টা করেন। একই সময়ে গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে বিকট শব্দ হয়। এ সময় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে রেস্তোরাঁ ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। ধোঁয়া শ্বাসনালিতে আটকে অসুস্থ হয়ে যান এষা। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মারা যান।

নিহত এষার চাচা শ্বশুর পিরোজপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী সদস্য শাকিল আহমেদ জানান, এষার শ্বশুর নাসির আহমেদ পিরোজপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর। তার স্বামী নাদিম আহমেদ ঢাকায় এসটি স্টিল নামে একটি রড কোম্পানিতে চাকরি করেন। এষা একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করতো। তাদের একমাত্র ছেলে আরহাম ঢাকার মালিবাগে সাউথ পয়েন্ট স্কুলে ক্লাস ওয়ানে পড়াশোনা করে। আরহাম কাচ্চি খাবে বলে মায়ের কাছে আবদার করেছিল। ছেলের আবদার মেটাতেই সেখানে যান এষা।

শাকিল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের পরিবারের সবার কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিল পুত্রবধূ তানজিনা এষা। আচার-আচরণে খুবই সহজ-সরল ছিল। তার নিহতের ঘটনায় পুরো পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’