কুয়াকাটা সৈকতে আবারও ভেসে এলো মৃত ডলফিন

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে আবারও ভেসে এলো ৪ ফুট লম্বা বোটলনোজ প্রজাতির মৃত ডলফিন। ডলফিনটির পুরো শরীরে চামড়া উঠানো ছিল। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকালে কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে ৬ কিলোমিটার পূর্বে গঙ্গামতি এলাকায় এটি ভেসে আসে বলে জানান স্থানীয় লোকজন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী বেলাল বিশ্বাস বলেন, দুপুরে জোয়ারের ঢেউয়ের সঙ্গে তীরে ভেসে আসে মৃত ডলফিনটি। এর শরীরের চামড়া উঠে গেছে। দেখে মনে হয়, গত তিন-চার দিন আগে মারা গেছে।

কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির সদস্য কেএম বাচ্চু বলেন, সকালে জোয়ারে বঙ্গোপসাগর কিছুটা উত্তাল থাকে। এ কারণে সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে তীরে ভেসে আসে মৃত ডলফিনটি। এটির শরীরের সম্পূর্ণ চামড়া উঠে গেছে। শরীরের কিছু কিছু জায়গা গলে গেছে। দুর্গন্ধে কাছে ঘেঁষা যাচ্ছে না। দেখে মনে হচ্ছে চার-পাঁচ দিন আগে মারা গেছে। এটি লম্বায় ৪ থেকে সাড়ে ৪ ফুট হবে। লেজ এবং চোখে আঘাতের চিহ্ন আছে। সম্প্রতি ডলফিন, তিমি ও কচ্ছপের মৃত্যুতে আমরা উদ্বিগ্ন।

সমুদ্রের নীল অর্থনীতি, উপকূলের পরিবেশ-প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ডফিশের ইকোফিশ-২ বাংলাদেশ প্রকল্পের সহযোগী গবেষক বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, ইকোফিশ অনেক দিন ধরে মৃত ডলফিনের কারণ অনুসন্ধানে কাজ করে যাচ্ছে। এসব মৃত ডলফিনের পাকস্থলীতে বিষক্রিয়ার কোনও উপাদান পাওয়া যায়নি, যার কারণে ডলফিনের মৃত্যু হতে পারে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সমুদ্রে মাছ ধরার ট্রলার, জেলেদের অসাবধানতা এবং সমুদ্রে প্লাস্টিকের পরিমাণ বৃদ্ধির কারণে পরিবেশটা নষ্ট হচ্ছে। এ কারণে এসব প্রাণী মৃত্যুর হুমকিতে পড়ছে।

কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, ২০২৪ সালে ১১টি মৃত ডলফিনের দেখা মিলেছে এই সমুদ্রসৈকতে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, যাতে এই ডলফিনগুলোর মৃত্যুর সঠিক কারণ অনুসন্ধান করা হয়।

বনবি ভাগের মহিপুর রেঞ্জের কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, কিছুদিন পর পর এসব মৃত ডলফিনের দেখা মিলছে। ডলফিন রক্ষা কমিটির মাধ্যমে আমরা মৃত্যুর কথা শুনছি। আমাদের সদস্যদের পাঠিয়ে দ্রুত মৃত ডলফিনটিতে মাটিচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি, যাতে সৈকতে দুর্গন্ধ না ছড়ায়।