সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা, এলাকাবাসীর প্রতিরোধে পালালো হামলাকারীরা

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর-তাঁতেরকাঠী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান এস এম মহসীনের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় এলাকাবাসী প্রতিরোধ করলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।

ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. এনায়েত হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম ও বিএনপি নেতা মো. আব্বাসের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরে একই ব্যক্তিরা ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মহসীন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তবে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। সোমবার বিকালেই তিনি এলাকায় প্রবেশ করেন। রাতে অভিযুক্ত সাইফুল ও আব্বাসের নেতৃত্বে ১২-১৫টি মোটরসাইকেলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ভুক্তভোগীর বাড়িতে হামলা করা হয়। এ সময় বাড়ির লোকজন ডাক-চিৎকার দিলে স্থানীয় জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। স্থানীয়দের ধাওয়া খেয়ে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। একই ব্যক্তিরা গত ৫ আগস্ট রাতে ভুক্তভোগীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে নগদ টাকা, স্বর্ণ ও দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। 

স্থানীয়রা জানান, সাবেক চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি ইব্রাহীম ফারুকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তারা নিজেরা প্রস্তাব দিয়ে এস এম মহসীনকে নির্বাচন করতে বাধ্য করেন এবং তাদের ভোটেই তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। মহসীন ইউনিয়নের মানুষের কল্যাণে কাজ করেন। তিনি কোনও অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মঙ্গলবার বেলা ১১টায় গ্রামবাসী মানববন্ধন করবেন বলেও জানান তারা। 

অভিযুক্ত সাইফুল হোসেন তার বাবার দলীয় পদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে এলাকায় নিয়মিত চাঁদাবাজি করছেন। সাইফুল ও তার বাবা এনায়েতের বিরুদ্ধে এ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশাসনের কাছে একাধিক অভিযোগও করা হয়েছে। এসব অভিযোগের কারণে সম্প্রতি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেনকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশও দিয়েছিল উপজেলা বিএনপি। এ ছাড়া অভিযুক্ত সাইফুলের বিরুদ্ধে বাউফল থানায় দুটি মাদক মামলা চলমান আছে।

অভিযোগের বিষয় জানতে একাধিকবার চেষ্টা করেও অভিযুক্ত সাইফুল হোসেনের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। এর আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’