জামিন পেলেও ছাড়া পাননি রসরাজ

রসরাজ দাসজামিন পেলেও কারামুক্ত হতে পারেননি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে গ্রেফতার রসরাজ দাস (২৭)। জামিনের ছাড়পত্র জেলা কারাগারে না পৌঁছানোয় তিনি কারাগার থেকে বের হতে পারেননি।

তবে ছাড়পত্রের কপি পৌঁছালে আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে কারাগার থেকে রসরাজের মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে, রসরাজের মুক্তির অপেক্ষায় তার তিন স্বজন দুপুর থেকে জেলা কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে অপেক্ষার প্রহর গোনেন। সর্বশেষ সন্ধ্যা ৬টার দিকে জামিনের ছাড়পত্র না পৌঁছানোর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট আইনজীবির মাধ্যমে জানতে পেরে হতাশা নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তারা।
কারা ফটকের সামনে রসরাজ দাসের মামা মৎস্য চিকিৎসক ইন্দ্রজিৎ দাস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রসরাজ মুক্তি পেতে যাচ্ছে। এখন রসরাজকে আগের মতো দিন-রাত জাল টানতে হবে। কারণ, এ কাজ ছাড়া তার দিন চলবে না। তাই রসরাজের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত।’
রসরাজের বড় ভাই দয়াময় দাস বলেন, ‘প্রমাণ হয়েছে রসরাজের মোবাইল থেকে এ ধরণের পোস্ট দেওয়া হয়নি। অথচ বিনা দোষে জেল খেটেছে রসরাজ। এখন আমাদের পরিবারের সদস্যদের ফাঁসানোর অপচেষ্টা চলছে। পুলিশ আশুতোষকে ধরে তার মাধ্যমে আমার ছোট ভাই পলাশের নাম বলানোর চেষ্টা করছে। এখন পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা চাই, যারা এই পোস্ট করেছে তদন্তের মাধ্যমে তাদেরকে বের করে শাস্তি দেওয়া হোক।’
রসরাজের ভগ্নিপতি নেপাল চন্দ্র দাস বলেন, রসরাজের নিরাপত্তা এখন বড় বিষয়। তাছাড়া আমরা এ ব্যাপারে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। আমরা চাই, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যম এ ঘটনায় জড়িতদেরই বিচার হোক।
এদিকে, জামিনে মুক্ত হওয়ার পর রসরাজ দাসের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নাসিরনগর থানা পুলিশ।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু জাফর বলেন, রসরাজের বাড়ির সামনে আগে থেকেই পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। আগামীকাল থেকে সেই ক্যাম্পে পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।
প্রসঙ্গত, পবিত্র কাবা শরীফ নিয়ে ফেসবুকে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (২) ধারার মামলায় গত ২৯ অক্টোবর গ্রেফতার হন রসরাজ দাস। এ ঘটনার প্রতিবাদে পরদিন ৩০ অক্টোবর নাসিরনগর উপজেলা সদরে দুটি ইসলামি সংগঠনের পক্ষ থেকে ডাকা সমাবেশ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। এ নিয়ে দায়ের হওয়া আটটি মামলায় মোট ১০৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

/বিটি/

আরও পড়ুন:
একফোঁটাও হাসি নেই নজরুলের স্ত্রী বিউটির

নূর হোসেন ও র‌্যাবের কমান্ডার তারেক সাঈদসহ ২৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

সাত খুনের চার্জশিট: যেভাবে নেওয়া হয় হত্যার প্রস্তুতি