অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও সহকারী বন সংরক্ষকের নেতৃত্বে দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল সরেজমিনে ঠেঙ্গারচর পরিদর্শন করার পর তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়। প্রতিবেদনটি গত বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
প্রতিবদনে উল্লেখ করা হয়, নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মূল ভূখণ্ড থেকে নদীপথে ১৫ কিলোমিটার দূরে ঠেঙ্গার চরের অবস্থান। আনুমানিক ১৫ বছর আগে মেঘনার বুকে জেড়ে ওঠে এই চর। জোয়ারের সময় চরটির আয়তন ১০ হাজার একর এবং ভাটার সময় ১৫ হাজার একর। ২০১০-১১ সাল থেকে সরকারিভাবে বনায়ন শুরু হয়। অনুকূল পরিবেশ না থাকায় জনমানবহীন চরটি এখন মূলত গরু-মহিষের চারণভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
তিনি আরও বলেন, ঠেঙ্গারচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের আগে চরের চারপাশে বেড়িবাঁধ নির্মাণ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, সুপেয় পানির ব্যবস্থা করাসহ ভৌত অবকাঠামো গড়ে তোলার সুপারিশ করেছে জেলা প্রশাসন। এছাড়াও ঠেঙ্গারচর এলাকায় জলদস্যু ও বনদস্যুদের আনাগোনা থাকায় নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। লোকালয় থেকে দূরে চরে রোহিঙ্গাদেরকে পুনর্বাসন করা হলে তাদের পক্ষে অপরাধ ছড়ানোর সম্ভাবনা কম বলে মন্তব্য করেন জেলা প্রশাসক।
এদিকে, ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল জয়নাল আবেদীনসহ সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের অনেকে ঠেঙ্গার চর পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে তিনি চরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি হেলিপ্যাড, জেটি ও গভীর নলকূপ নির্মাণসহ বিভিন্ন বিষয়ে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার রেজাউল করিমকে দিক নির্দেশনা দেন।
প্রসঙ্গত,মানবিক কারণে কক্সবাজারে অবস্থানরত প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গাকে দেশে ফেরার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত স্থায়ীভাবে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ঠেঙ্গারচরে আশ্রয় দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। সরকারের এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। আর পুনর্বাসনের বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের পর ঠেঙ্গারচরটি জনবসতির উপযোগী কিনা সে বিতর্ক ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা প্রশাসনকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
/বিএল/টিএন/