সোমবার কুমিল্লা সিভিল সার্জনের নির্দেশে ডেপুটি সিভিল সার্জনকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়। ফ্রান্স প্রবাসী প্রিতম আলম অন্তুর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসক এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ছিল কিনা তা তদন্ত করে কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৪ জুলাই) কুমিল্লা নগরীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রিতম নামে ওই শিশুর মৃত্যু হয়। প্রিতম সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্যারিস আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক অপু আলমের ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার বাগমারা এলাকার মনোহরপুর গ্রামে।
হাসপাতাল সূত্র ও শিশুর পরিবারের অভিযোগে জানা যায়, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সামান্য জ্বর ও বমি নিয়ে প্রিতমকে (৬) কুমিল্লা নগরীর রামঘাটস্থ মিডল্যান্ড হাসপাতালে ডা. আজিজুল হোসেনের অধীনে ভর্তি করা হয়। তিনি ওই হাসপাতালের খণ্ডকালীন চিকিৎসক ও কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান।
চিকিৎসকের পরামর্শে বেলা ১১টার দিকে প্রিতমের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু দুপুরে ডা. আজিজুল হোসেন বাসায় চলে যান। সন্ধ্যায় হাসপাতালে ফিরে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখেন। পরে তিনি প্রিতমের শরীরে পটাসিয়ামের শূন্যতা উল্লেখ করে দ্রুত ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। এর আগে পরীক্ষা রিপোর্ট যথাসময়ে না দেয়ার কারণে সঠিক চিকিৎসা সেবা ছাড়াই প্রায় ৭ ঘণ্টা হাসপাতালের বেডে শুইয়ে রাখা হয় প্রিতমকে। ওই রাতে প্রিতমকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত সোয়া ১১টায় সেখানকার ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ওই শিশুর মৃত্যুর খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরই মধ্যে ভাইরাল হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় প্রিতমের আত্মীয়-স্বজনরা মিডল্যান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তোলেন।
প্রিতমের বাবা অধ্যাপক অপু আলম বলেন, ‘সময় মতো রিপোর্ট এবং ডাক্তার দেখাতে পারলে হয়তো আমার ছেলেকে বাঁচানো যেত।’
সোমবার বিকালে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান জানান,ওই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ছিল কিনা তা অনুসন্ধান করতে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. কামাল উদ্দিন আহাম্মদকে প্রধান ও মেডিক্যাল অফিসার ডা. শাহাদৎ হোসেনকে সদস্য সচিব করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর ২ সদস্য হচ্ছেন শিশু বিশেষজ্ঞ ডা.ত্রিবিদ কুমার রায় এবং ডা.খোকন কান্তি মজুমদার। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কমিটিকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক অপু আলম প্যারিস থেকে প্রকাশিত পাক্ষিক প্রবাস বাংলা পত্রিকার
সম্পাদক এবং তার স্ত্রী নাজিয়া আলম ওই পত্রিকার প্রকাশক। গত ২২ জুন স্ত্রী ও ২ ছেলেকে নিয়ে ফ্রান্স থেকে দেশে আসেন অপু আলম।
/বিএল/