এ স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রিয়া আক্তার, মাহবুবা খানম, নাহিদ হাসান শুভ। তাদের তিনজনের ক্লাস রোল ১, ২, ৩। তারা বললো, ‘এই ভবনেতো সমইস্যা। আমাদের গায়ে পানি পড়ে। আমরা ভিজি যাই। মাঝে মধ্যেই ওপর থেকে পাথরের মতো কী যেন (পলেস্তরা) গায়ে পড়ে। আমরা ব্যাথা পাই। আমাদের ভয় লাগে। আর মেঘ অইলেতো আমরা ভিজি যাই।’
চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী হাসিবা বলে, আমাদের এই ভবনে পড়তে খুবই খারাপ লাগে। ভবনের দিকে তাকালেই মনে হয় যেকোনও মুহূর্তে এটি ভেঙে আমাদের গায়ে পড়বে। প্রায়ই ওপর থেকে পলেস্তারা খসে পড়ে আমাদের গায়ে।
শিক্ষক হাসিনা আক্তার বলেন, ‘স্কুলে বাচ্চাদের কষ্ট হলেও আমরা পড়াচ্ছি। কিন্তু মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বাচ্চাদের নিয়ে সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকি। কখন ছাদ থেকে পলেস্তারা পড়ে কিংবা ভবন ধসে পড়ে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে।’
শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ স্কুলের ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে প্রায় ৮ বছর আগে। কয়েকবার স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা অফিসারের কাছে আবেদনও করেন। সে প্রেক্ষিতে ওই স্কুল ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার ডিজি বরাবর চাহিদাপত্র দেন। কিন্তু এখনও ভবন হয়নি। কবে হবে তাও ঠিকমতো বলতে পারছে না কেউ।
৭নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের ৬৯নং সাদ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হাসান মিজি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, `এ স্কুলে অনেক ছাত্রছাত্রী ছিল। কিন্তু ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অভিভাবকরা বাচ্চাদের অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার স্কুলেও আসতে চায় না।‘
তিনি আরও বলেন, ‘স্কুলে বর্তমানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১০৭ জন ছাত্রছাত্রী আছে। ভবন না থাকায় বারান্দায় ক্লাস নিতে হয়। ভবন না হলে আগামীতে ছাত্রছাত্রী আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
হাজীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম বুলবুল সরকার বলেন, ‘আমার আগে যিনি এখানে দায়িত্বে ছিলেন তিনিও কয়েকবার তালিকা দিয়েছেন। তবে আমি আসার পর জুলাই মাসের প্রথম দিকে ৩৫টি স্কুলের ভবন নির্মাণের জন্য এমপি ও ইউএনও স্যার আমাদের কাছ থেকে একটি তালিকা নিয়েছেন। তালিকার প্রথমেই এ স্কুলটির নাম রয়েছে। তবে কবে নাগাদ এ ভবনগুলোর নির্মাণ কাজ হবে তা বলতে পারছি না।’
/এআর/