বিদ্যালয় ঘেঁষে গরু-মুরগির খামার, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা

বান্দরবানে বিদ্যালয়ের পাশে গড়ে তোলা হয়েছে মুরগি ও গরুর খামারবান্দরবানে চেমী ডলুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেঁষে গড়ে তোলা হয়েছে গরু ও মুরগির খামার। এতে স্কুল চলাকালীন সময়ে মুরগি ও গরু খামারের দুর্গন্ধে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশু শিক্ষার্থীরা। এসব শিশুদের সুস্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনা করে খামার দুটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য খামার কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা কোনও প্রকার তোয়াক্কা করছেন না বলে অভিযোগ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বান্দরবান সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নের চেমী ডলুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেঁষে কোনও প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে একটি মুরগি ও গরু খামার গড়ে তুলেছে উক্ত এলাকার বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মংক্যউচিং মারমা এবং স্থানীয় বাসিন্দা মংক্যহ্লা মারমা।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক, অভিভাবক এবং স্থানীয় মানুষজন শিক্ষার্থীদের সুস্বাস্থ্য রক্ষার কথা বিবেচনা করে খামার দুটি অন্যত্র সরিয়ে নিতে খামার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করলেও তারা তা আমলে নিচ্ছে না।

বান্দরবানে বিদ্যালয়ের পাশে গড়ে তোলা হয়েছে মুরগি ও গরুর খামারশিক্ষার্থীরা জানায়, অত্যাধিক দুর্গন্ধের কারণে বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে ফ্যানও বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে তারা। এছাড়া প্রতিদিনই মাথা ব্যথাসহ নানাবিধ রোগেও আক্রান্ত হচ্ছে কেউ না কেউ।

এ বিষয়ে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কেচিং মারমা জানান, ১৯৫৪ সালে সরকারিভাবে স্থাপিত এ প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে অধ্যায়নরত রয়েছে ২২৪ জন শিক্ষার্থী। তারা কেউই খামারের মুরগি ও গরুর বর্জ্য এবং মেডিসিনযুক্ত খাবারের দুর্গন্ধে ঠিকমতো ক্লাস করতে পারছে না।

চেমী ডলুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোজ কান্তি বড়ৃয়া বলেন, বিদ্যালয়ে পাঠদান চলাকালে বর্জ্য, মেডিসিনের গন্ধে অনেক সময় শিশু ছাত্র-ছাত্রীরা বমি, মাথা ব্যথা, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাসহ নানা কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। শুধু তারাই নয়, আমরা যারা শিক্ষক আছি তারাও এর শিকার হচ্ছি।

মুরগির খামারের মালিক মংক্যউচিং মারমা বলেন, ‘এ বিদ্যালয়ের ভবনটি আগে অন্য জায়গায় ছিল। মুরগির খামারটি গড়ে ওঠার অনেক বছর পর বিদ্যালয়ের এ ভবনটি করা হয়েছে। এটি আমার নিজস্ব জায়গা, তাই এ খামারটি এখনই সরানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়।

গরুর খামারের মালিক মংক্যহ্লা মারমা জানান, গরুর খামারটি অস্থায়ী। তবে গিগগিরই তিনি এ খামারটি এখান থেকে সরিয়ে নেবেন বলে জানান।

বান্দরবান সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা রতন কুমার দাশ বলেন, জনবহুল এলাকা, শিক্ষা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে দুইশ মিটার দূরে খামার স্থাপনের নিয়মনীতির কথা থাকলেও এ খামারের মালিকরা তা মানছে না।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হয় এ ধরনের কোনও কাজ কাউকে করতে দেওয়া হবে না। কর্তৃপক্ষকে খামারগুলো অন্যত্রে সরিয়ে নিতে অনুরোধ করা হবে। অন্যথায় তাদের উভয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।