বিএনপি নেতারা দাবি করেন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশের বাধার মুখে তাদের ত্রাণের বহর শরণার্থীদের অস্থায়ী ক্যাম্পে যেতে পারেনি। আর ওই সংবাদ সম্মেলন থেকে বের হয়ে হোটেলে যাওয়ার পথে পুলিশ মির্জা আব্বাসের গাড়িবহরকে আটকে দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে ত্রাণ দলের প্রধান হিসেবে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপি এখানে রাজনীতি করতে আসেনি, ত্রাণ দিতে এসেছিল। সেই ত্রাণ বিতরণে বাধা দিয়ে সরকার অপরাধ করেছে।’
ত্রাণ বিতরণে বাধা দিয়ে সরকার ‘জঘন্য উদাহরণ সৃষ্টি করলো’ দাবি করে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পগুলোতে যারা আছেন তাদের কোনও গোসল নেই, পানি নেই, খাদ্য নেই। ওখানে মানবিক বিপর্যয় চলছে। ওখানে গেলে আমরা তা জেনে যাবো। তার জন্যই আমাদের সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি।’
মির্জা আব্বাস জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘বিএনপির ত্রাণগুলো সরকারের কাছে (জেলা প্রশাসন) জমা দিতে হবে। তারাই সেটা বিতরণ করবে।’
তিনি পুলিশি বাধার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘ত্রাণ দিতে যাওয়ার সময় দেখলাম, ট্রাক আর চলে না! পুলিশ চালকের কাছ থেকে গাড়ির চাবি কেড়ে নিয়ে চালকদের সরিয়ে দেয়। পরে চালকদের খুঁজে আনলে চাবি ফিরিয়ে দেওয়া হলেও গাড়িবহরের সামনে পুলিশের একটি পিকআপ দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
মির্জা আব্বাস আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য লন্ডনে থাকা আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২৮ আগস্ট নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অথচ সরকার সীমান্তে বর্ডার গার্ড মোতায়েন করে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ডুকতে বাধা দিয়েছে।’
বিএনপির ত্রাণবাহী টিমে আছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। বুধবার সন্ধ্যায় বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘দুপুর আড়াইটার সময় আমরা রওনা দিলেও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ৩টার মধ্যেই যেতে দেবে। কিন্তু বিকাল ৫ টা পর্যন্ত আমাদের কক্সবাজার বিএনপির কার্যালয়ের ভেতরেই আটকে রাখে।’ তিনি আরও বলেন, 'ত্রাণবাহী ২২ টি ট্রাকে করে রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা দেওয়ার জন্য চাল, ডাল, শুকনা খাবার, মোমবাতি, প্লাস্টিকের জিনিসপত্র নিয়ে যেতে চাচ্ছি। কিন্তু বাধা দেওয়া হল। আমরা আবার কাল ত্রাণ নিয়ে যাব। আশা করছি, সরকার বাধা দেবে না।'
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমাদের নেত্রী (খালেদা জিয়া) বলেছেন, মানবিক কারণে আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবো। তাদের আবার নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির খান জুয়েল প্রমুখ।
আরও পড়ুন- রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি ৪০ দেশের কূটনীতিকদের আহ্বান