রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাঁশ ও পলিথিনের কৃত্রিম সংকট

টেকনাফের বাজারে পলিথিনের দোকানকক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় বাঁশ ও পলিথিনের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। সংকট দেখিয়ে উখিয়া ও টেকনাফের শরণার্থীদের কাছে এগুলো চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী বাঁশ ও পলিথিনের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছে। সহায় সম্বল হারানো রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার সময় যেটুকু টাকা সঙ্গে নিয়ে এসেছেন তা ব্যয় করতে হচ্ছে বাঁশ ও পলিথিনের পেছনে।

সরেজমিন উখিয়ার কুতুপালং বাজার, বালুখালী পানবাজার, থাইংখালী ও পালংখালী বাজার ঘুরে দেখা গেছে,একটি ১২ ফুট লম্বা বাঁশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়। অথচ সেই বাঁশ রোহিঙ্গা সংকটের আগে বিক্রি হতো ১০০-১২০ টাকায়। একইভাবে জেলার বিভিন্ন উপকূলীয় লবণ মাঠে ব্যবহৃত কালো রঙের এক পিস পলিথিন বিক্রি হতো ১৫০-২০০ টাকায়। আর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশের এসব বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮০০ টাকায়। এ কারণে শুধু রোহিঙ্গারা নয়, স্থানীয়রাও বিপাকে পড়েছে।

৯৯৯

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী বাজারে পলিথিন কিনতে আসা রোহিঙ্গা ছপুরা খাতুন, লাল মিয়া, আবুল ফয়েজ ও মরিয়ম খাতুনসহ অনেকে জানিয়েছেন,বালুখালীর একটি ছোট পাহাড়ি জমিতে আশ্রয় হয়েছে তাদের। কিন্তু,ঘর বানাতে বাঁশ ও পলিথিনের প্রয়োজন। মিয়ানমার থেকে আসার সময় যেটুকু টাকা সঙ্গে নিয়ে আসতে পেরেছিলেন, তার সবই চলে গেছে পরিবারের জন্য খাবার কিনতে। এখন বাঁশ, বেড়া বা পলিথিন কেনার জন্য কোনও টাকা নেই।

কুতুপালং বাজারের ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলম জানান,শুধু বাঁশ,পলিথিন নয়,রোহিঙ্গা আসার পর থেকে এই এলাকায় সব কিছুর দাম বেড়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ এমন কোনও কিছু নেই যে দাম বাড়েনি। রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রাও বিপাকে পড়েছে।

রোহিঙ্গা পরিবার

প্রসঙ্গত, গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে পুলিশ পোস্টে হামলা চালায় ওই দেশের একটি বিদ্রোহী গ্রুপ। এতে ১২ পুলিশ সদস্যসহ বহু রোহিঙ্গা হতাহত হয়েছে। এ ঘটনায় মিয়ানমারের সেনাবহিনী রাখাইন রাজ্যে অভিযানের নামে সাধারণ মানুষের ওপর হত্যা, ধর্ষণ ও বাড়িঘরে আগুন  দেওয়াসহ নানা নির্যাতন শুরু করে। এরপর থেকেই বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল নামে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

আরও পড়ুন:

 

রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন হবে ঠেঙ্গারচরে, এগিয়ে চলছে ভূমি উন্নয়নের কাজ

রোহিঙ্গাদের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাহত পাঠদান