কাঠের ব্যবসায়ী থেকে কর বাহাদুর

‘কর বাহাদুর’ মো. হেলাল উদ্দিনব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ‘কর বাহাদুর পরিবার’ নির্বাচিত হয়েছে ব্যবসায়ী, সাবেক পৌরমেয়র মো. হেলাল উদ্দিন ও তার পরিবার। তিনি ছাত্রজীবনেই কাঠের ব্যবসা শুরু করেন এবং দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে কর দিয়ে আসছেন।
কর বাহাদুর সম্মাননা পাওয়া হেলাল উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই সম্মাননায় আমি এবং আমার পরিবার গর্ববোধ করছি।’ তিনি বলেন, ‘১৯৭৯ সালে ছাত্র থাকা অবস্থায় কাঠের ব্যবসা করতাম। তখন থেকেই নিয়মিত কর দিতাম। ১৯৯৯ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর খামখেয়ালিপনায় কয়েক বছর গ্যাপ পড়ে যায়। পরে আবার এসব গ্যাপ ফিলাপ করি।’

‘কর বাহাদুর’ সম্মাননা নিচ্ছেন মো. হেলাল উদ্দিনহেলাল উদ্দিন বলেন, ‘কর দেওয়া মানে রাষ্ট্রীয় কাজে নিজের সম্পৃক্ততার পাশাপাশি দেশের সেবা করার উত্তম সুযোগ। নিজের কষ্টার্জিত সম্পদের রাষ্ট্রীয় বৈধতাও পাওয়া যায়। কর দেওয়া ছাড়া কোনও কিছুতেই শৃঙ্খলতা আসে না।’
পরিবারের সদস্যদের কর দেওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে সদ্য পদক পাওয়া এই কর বাহাদুর বলেন,‘সেই ছাত্রজীবন থেকে কর দেই। স্ত্রী রুমেলা পারভীন, বড় ছেলে রেজুয়ানুল হক মনি,পুত্রবধূ রিতা আক্তার ইতি, ছোট ছেলে ইজাজুল হক রাব্বীকেও কর দেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করি। কেননা ছেলেরা পুকুরে মাছ চাষ, কাঠের ব্যবসা, প্রাইভেট হাসপাতালের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। পাশাপাশি বাড়ির নারী সদস্যদের নামেও সম্পদের মালিকানা থাকায় তাদেরকেও কর দেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছি।’
‘কর বাহাদুর পরিবার’ তিনি বলেন, ‘আমি এবং আমার পরিবারের কর দেওয়া দেখে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী অনেকেই কর দেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত হয়েছে এটাই আমার জন্য বড় পাওয়া।’
কর বাহাদুরের বড় ছেলে রেজুয়ানুল হক মনি বলেন, ‘আব্বার মতো ছাত্রজীবন থেকে আমিও ব্যবসা শুরু করি। তখনই আব্বা আমাকে কর দেওয়ার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন। আমার স্ত্রী এবং ছোট ভাইকেও একইভাবে উৎসাহ দিয়েছেন আব্বা।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া কর সার্কেল-৪ এর অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, এ বছর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২০ জনের নাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চল থেকে কুমিল্লায় পাঠানো হয়। তাদের মধ্য থেকে মো. হেলাল উদ্দিনকে কর বাহাদুর মনোনীত করা হয়। হেলাল উদ্দিন ২৯ বছর ধরে কর দিচ্ছিলেন। তিনি গত বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ‘দীর্ঘমেয়াদি সেরা করদাতা’ নির্বাচিত হয়েছিলেন। পেশায় তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী এবং কৃষি জমির মালিক। এছাড়া জেলায় আরও আট জনকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে কর সম্মাননা দেওয়া হয়।

তিনি জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ই-টিনধারী গ্রাহক সংখ্যা ৪১ হাজার। এর মধ্যে ২৫ হাজার গ্রাহক আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। তাদের মধ্যে ১৫ হাজার গ্রাহক নিয়মিত কর দিচ্ছেন।
অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার মনিরুল ইসলাম আরও জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলে শতকরা ৮০ ভাগ ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে এখন পর্যন্ত করের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। বাকি ২০ ভাগ মানুষকে করের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।