ওভারব্রিজের নির্মাণ কাজে ধীরগতি, ফেনীর সড়কে যাত্রীদের ভোগান্তি

সড়কে যাত্রীদের ভোগান্তিঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী অংশের ফতেহপুর রেলক্রসিংয়ে ওভারব্রিজের নির্মাণ কাজ চলছে ধীরগতিতে। এ কারণে যানজটের ভোগান্তি এখন যাত্রীদের নিত্যসঙ্গী। তবে সম্প্রতি মহিপালে ছয় লেনের ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ২৭ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা তুলনামূলক ভালো। ওই অংশে যানজট কমলেও ফতেহপুরের সড়কে যাত্রীদের অবস্থা নাকাল।

মহাসড়কে চলাচলকারী এনা পরিবহনের বাস চালক শাহেদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর ফতেহপুরে রেলক্রসিংয়ে ওভারব্রিজ নির্মাণকে কেন্দ্র করে এক পাশের রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। একদিক দিয়ে চলাচলের সময় আরেক দিকের গাড়ি থেমে থাকছে। এতে করে রাত-দিন যানজট লেগেই থাকে। ফলে দশ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে এক থেকে দেড় ঘণ্টা।’

ফেনী বাজারের চাল ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন খান বলেন, ‘যানজটের কারণে পাঁচ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা। এ কারণে ট্রাকের ভাড়া প্রায় ৪০ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছেন মালিকরা। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে একদিকে দুর্ভোগ অন্যদিকে চালসহ নিত্যপণ্যের দামও বাড়ছে।’

জেলা মালিক পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন বুলবুল বলেন, ‘ছয় লেনের ফ্লাইওভার উদ্বোধনের কারণে ওই স্থানে যানজট নিরসন হয়েছে। তবে মহাসড়কে ফতেহপুরে রেলক্রসিংয়ে ওভার ব্রিজ নির্মাণের কারণে এই অংশে একমুখী যানবাহন চলাচল করে। এ কারণে যানজট লেগেই থাকে ।’  

অন্যদিকে, মহাসড়কের পুরাতন ঢাকা-চট্টগ্রামের ট্রাঙ্ক রোড দিয়ে বেশি সংখ্যায় গাড়ি প্রবেশ করায় ফেনী শহরেও এখন প্রতিদিন যানজট লেগে থাকে। ফেনীর পরিবহন মালিকরা জানান, মহাসড়কে ‘পথচারী ও মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা বাড়ছে। হাইওয়ে ট্রাফিক পুলিশ ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছে না।

চলছে নির্মাণকাজহাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা জোনের (দক্ষিণ) পুলিশ সুপার পরিতোষ ঘোষ বলেন, ‘ফেনীর ফতেহপুর রেললাইনের ওপর নির্মাণাধীন ফ্লাইওভার ও মহিপালের ওভাব্রিজের কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে যানজট নিরসনে পুলিশের একাধিক টিম নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মহাসড়কের যানজটের অন্যতম কারণ হচ্ছে, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চার লেন প্রকল্প ও বেশির ভাগ রাস্তায় ছোট ছোট অসংখ্য গর্ত।’

সড়কে যানজ়টের ভোগান্তিজানা যায়, মহাসড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণ ও চলাচল নির্বিঘ্ন করতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে পাঁচ বছর আগে ফেনীর ফতেহপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের ওপর ওভারপাস নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১০০ কোটি টাকা বাজেটে ওভারপাসটির নির্মাণ কাজ দেওয়া হয় ‘শিপো পিবিএল লিমিটেড’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ওভার পাসটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। চুক্তি অনুযায়ী তিন বছরের মধ্যে কাজটি শেষ করার কথা থাকলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তা করতে পারেনি।

পরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ওভারপাসটির কাজ পরিদর্শনে এসে এর অগ্রগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ বাতিল করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নির্মাণের দায়িত্ব দেন।

সংশ্লিষ্ট প্রজেক্ট ম্যানেজার মোজাফ্ফর আহমদ জানান, গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কে একদিক দিয়ে যানবাহন চলাচল করলে যানজটের সৃষ্টি হবে, এটাই স্বাভাবিক। এজন্য সেনাবাহিনী ওভারপাসটি নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।