বিয়ে নয়, শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠান পলাশের বাড়িতে

ফেনীতে পলাশের জানাজানেপাল থেকে ফিরলে ছেলেকে বিয়ে করানোর পরিকল্পনা ছিল পরিবারের। মেয়েও দেখে রেখেছিলেন। তবে সেই বিয়ের উৎসব আর হলো না। সবাইকে যোগ দিতে হলো শেষ বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতায়। নেপালের কাঠমান্ডুতে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত মতিউর রহমান পলাশের লাশ গ্রামের বাড়ি পৌঁছার পর আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, এলাকাবাসী বাড়িতে সমবেত হন। চোখের পানিতে পলাশকে বিদায় জানান তারা।

মঙ্গলবার (২০ মার্চ) সকাল ১০টায় পলাশের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় ফেনীর সোনাগাজি উপজেলার বাগাদানা ইউনিয়ন পরিষদের আড়িয়াল খিল গ্রামে। জানাজার নামাজে অংশ নেন স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, প্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী। এই সময় নিহতের  স্বজন, সুহৃদদের কান্নায় জানাজাস্থলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য তৈরি হয়। জানাজা শেষে আড়িয়াল খিল গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে পলাশকে দাফন করা হয়েছে।ফেনীতে পলাশের জানাজা

এর আগে বুধবার ভোরে পলাশের লাশ তার বাড়িতে পৌঁছায়। স্থানীয়রা শেষবারের মতো তাকে দেখতে বাড়িতে ভিড় করেন। স্থানীয় চেয়ারম্যান ইসাক খোকন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নেপাল থেকে দেশে ফিরলে পলাশকে বিয়ে করানোর পরিকল্পনা ছিল তার পরিবারের। এই জন্য মেয়েও দেখে রেখেছিলেন তারা। বিয়েতে যোগ দিয়ে উৎসব করার কথা ছিল স্বজনদের। কিন্তু এখন সবাই এসেছে তাকে চিরবিদায় জানাতে। তাকে কবরে শোয়াতে। বাবার কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়েছে।’

পলাশের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার মা নূরজাহান বেগম ছেলের শোকে কাতর। নামাজ পড়ছেন আর মোনাজাতে হাত তুলে শুধুই কাঁদছেন।মতিউর রহমান পলাশ

পলাশ ঢাকায় রানার অটোমোবাইলস কোম্পানিতে কাজ করতেন। অফিসের কাজেই তাকে নেপালে পাঠানো হয়েছিল। ছয় ভাইবোনের মধ্যে পলাশ সবার ছোট। তিনি ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা করে ঢাকায় রানার অটোমোবাইলসে চাকরি করতেন।

প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ চার ক্রু ও ৬৭ যাত্রীসহ মোট ৭১ জন আরোহী নিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে কাঠমান্ডু পৌঁছে বিধ্বস্ত হয়। এই ঘটনায় ৪৯ জন মারা যান, যার মধ্যে বাংলাদেশি ২৬ জন। আহত হন ১০ বাংলাদেশি।