কর্মচারী সেজে বাসায় ডাকাতি ও গৃহকর্মীকে ধর্ষণের ঘটনা স্বীকার ৩ জনের

 

চট্টগ্রামকর্মচারী সেজে বাসায় ঢুকে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার তিন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।এসময় গৃহপরিচারিকাকে ধর্ষণের কথাও স্বীকার করে এক ডাকাত। সোমবার (২১ মে) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আল ইমরানের আদালতে তারা জবানবন্দি দেয়। ধর্ষকের নাম মো. ইকরাম হোসেন রিংকু (২৬)। সে ওই গৃহকর্তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করতো। তার পরিকল্পনায় ওই ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী এ তথ্য জানিয়েছেন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন মির্জাপুল এলাকার একটি বাসায় ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে তিনজন আজ  আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।’


গ্রেফতার চারজন হচ্ছে, মো. ইকরাম হোসেন রিংকু (২৬), মেহেদী হাসান (১৯), মোহাম্মদ আলী (২২) এবং মেজবাহ উদ্দিন (২২)। এদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী ছাড়া অন্যরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।





এ সম্পর্কে জানতে চাইলে পাঁচলাইশ থানার ওসি (তদন্ত) ওয়ালী উদ্দিন আকবর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত ১৬ মে সকাল ১১টার দিকে মির্জাপুল এলাকার ইকুইটি ভিলেজ ভবনের ৭ম তলার এইচ-৭ ফ্ল্যাটে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওইদিনই থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় রবিবার (২০ মে) নগরী ও আশপাশের উপজেলায় অভিযান চালিয়ে আমরা চারজনকে গ্রেফতার করি। আজ  আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি এদেরই তিনজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছেন তাদের মধ্যে ইকরাম হোসেন রিংকু ও মেহেদী হাসান ঘটনার দিন একটি কার্টুন নিয়ে ইকুইটি ভিলেজে যায়। সেখানে গিয়ে দারোয়ানকে সপ্তম তলার এইচ-৭ ফ্ল্যাটের ড্রাইভার সাদ্দাম নামে মিথ্যে পরিচয় দিয়ে তারা কার্টুনটি নিয়ে সপ্তম তলায় গিয়ে কলিংবেল দেয়। দরজা খোলার পর অফিস থেকে বাসার জন্য কার্টুনটি পাঠিয়েছে বলে তারা বাসায় প্রবেশ করে। বাসায় ঢুকেই তারা গৃহকর্ত্রীকে আটকিয়ে টেপ দিয়ে হাত, মুখ, পা বেঁধে ফেলে। পরে গৃহপরিচারিকাকেও বেঁধে রিংকু এবং তাকে বাথরুমে ধর্ষণ করে। এরপর তারা গৃহকর্ত্রীকে ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে চাবি নিয়ে আলমারিতে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা, ৩টি মোবাইল সেট ও তার কানের দুল নিয়ে পালিয়ে যায়। ডাকাতি চলার সময় অন্যরা নিচে বাসার মালিককে পাহারা দিয়েছিল বলে তারা স্বীকার করেছে।

ওয়ালী উদ্দিন আকবর আরও বলেন,‘মামলার এজাহারে ধর্ষণের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। লোকলজ্জার ভয়ে গৃহপরিচারিকা নিজেও বিষয়টি জানাননি। গ্রেফতারের পর আমরা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা বিষয়টি স্বীকার করে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতেও রিংকু ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেছে।’

পাঁচলাইশ থানার ওসি (তদন্ত) আরও বলেন, রিংকু ওই গৃহকর্তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ছিল। একটি চুরির ঘটনায় বছরখানেক আগে তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়।