চেঙ্গি নদীর ওপর এগিয়ে চলছে সেতু নির্মাণের কাজ

রাঙামাটির নানিয়ারচরে চেঙ্গি নদীর ওপর বহুল আকাঙ্ক্ষিত ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। চলতি বছরের মধ্যে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জুন মাসে অতি বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলের কারণে হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৪ কোটি টাকা। মঙ্গলবার (১৪আগস্ট) সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ডাকবাংলো এলাকায় শ্রমিকরা গার্ডার ঢালাইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের দাবি, ঈদের আগে ডাকবাংলো এলাকার গার্ডার ঢালাইয়ে কাজ শেষ করতে পারবেন তারা। তবে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করতে আগামী বছরের জুন মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।চেঙ্গি নদীর ওপর নির্মিয়মান সেতুএলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা মনে করেন, চেঙ্গি নদীর ওপর নির্মিয়মান সেতুটি জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে ভাগ্য খুলে যাবে জেলার নানিয়ারচর, লংগদু ও বাঘাইছড়িতে বসবাসকারীদের। এর সাথে সুবিধা পাবেন খাগড়াছড়ি জেলার মাহালছড়ি এলাকার জনগণ। রাঙামাটি জেলার সাথে বেশ কয়েকটি উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। ব্যবসায়িক যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। সেই সাথে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত পণ্য সহজে বাজারজাত করা সম্ভব হবে।

সরাসরি রাঙামাটি-নানিয়ারচর-লংগদু-বাঘাইছড়ি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ১৯৯৩ সালে নানিয়ারচর অংশে চেঙ্গি নদীর ওপর সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নানিয়ারচরের চেঙ্গি নদীর ওপর সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন। মন্ত্রীর ঘোষণার দুই বছর পর ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে শুরু হয় সেতু নির্মাণের কাজ। এটি বাস্তবায়নে কাজ করছে সেনাবাহিনীর ১৯ ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন ব্যাটেলিয়ান (ইসিবি)।

নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কোয়ালিটি চাকমা বলেছেন, ‘এই ব্রিজটির জন্য নানিয়ারচরের উন্নয়ন থমকে আছে। স্বাস্থ্যসেবা সহজ লভ্য করা থেকে শুরু করে কৃষিজাত পণ্য সহজে পরিবহন করার ক্ষেত্রে এই ব্রিজটি ভূমিকা রাখবে। এই এলাকার মানুষের কাছে এটা পদ্মা সেতুর মতোই বহুল আকাঙ্ক্ষিত।’

চেঙ্গি সেতু নির্মাণকারী সংস্থা মনিকো লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার শরিফুল আলম জানিয়েছেন, ‘হঠাৎ বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢল সৃষ্টি হয়েছিল। এতে বৃদ্ধি পেয়েছে হ্রদের পানি। ফলে নির্ধারিত কিছু কাজ এখন বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও ডাকবাংলো এলাকায় গার্ডার ঢালাইয়ের প্রস্তুতি চলছে। এই কাজ শেষে নদীর অপর প্রান্তে হাসপাতাল এলাকায় সেতুর কাজ শুরু হবে। পানি কমলে নদীর মাঝখানের পিলারের কাজে হাত দেওয়া হবে। এর মধ্যে রাস্তার জরিপ করা হবে। এ বছরে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। আশা করছি, আগামী বছরের জুনে শেষ করা সম্ভব হবে।’