নুসরাত হত্যা: মানি লন্ডারিংয়ের তথ্য পেয়েছে সিআইডি

গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন ফারুক হোসেন (ছবি– প্রতিনিধি)

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় মানি লন্ডারিংয়ের তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে সিআইডি সদর দফতরের ইকোনোমিক ক্রাইম স্কোয়ার্ডের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেন একথা জানিয়েছেন।

মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘নুসরাত হত্যার ঘটনায় মানি লন্ডারিংয়ের অনেক তথ্য-উপাত্ত পেয়েছি। সোনাগাজীতে থাকা বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা থেকে এসব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘লন্ডারিংয়ের এসব তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। যদি স্থানীয় কোনও ব্যাংক সন্দেহভাজনদের আর্থিক লেনদেনের তথ্য গোপনও করে, তাহলে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের মানি লন্ডারিং শাখার মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে।’

নুসরাত হত্যাকাণ্ডে মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠলে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সিআইডি। এ কমিটির প্রধান মো. ফারুক হোসেন আজ সোনাগাজীতে থাকা বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় অনুসন্ধান চালান।

প্রসঙ্গত, নিহত নুসরাত সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে তিনি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে পাশের বহুতল ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান। এই ঘটনায় নুসরাতের ভাইয়ের দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই।

এ ঘটনায় নুসরাতের বড়ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে গত ৮ এপ্রিল ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। ১০ এপ্রিল মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই’তে হস্তান্তর করা হয়। পিবিআই ২২ জন আসামি গ্রেফতার করে। এর মধ্যে ৮ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ৭ জন রিমান্ডে রয়েছে।