চাঁদপুরে বাঁধ ভেঙে পানির নিচে কৃষকের পাকা ধান

 

পানির নিচে পাকা ধান

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের খালের বাঁধ ভেঙে গেছে। সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর পৌনে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে অনেক কৃষকের পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রায় ৩ একর জমির পাকা ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কৃষকদের।

স্থানীয়রা জানান, বিকাল ৫টা নাগাদ উদ্দমদী সেচ পাম্পের ইউ-১ সেচ খালের ৬ নম্বর টার্ন আউটের পূর্ব পাশে বিশাল অংশ ভেঙে যায়।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, ওই এলাকার লাইনম্যান জহিরুল ইসলাম, উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) সালাউদ্দিন আহমেদ ও পাউবোর নির্বাহীকে মোবাইলে ফোন করলেও কল রিসিভ করেনি।

পশ্চিম বাইশপুরের (বালুচর) ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক খোকন মাল (৩০) জানান, তার জমির ৬০ শতাংশ পাকা ধান মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। লাইনম্যান জহিরুল ইসলামকে ফোন করার পরও আসেনি।

পশ্চিম বাইশপুরের কৃষক নজরুল ইসলাম ওরফে বাবু জানান, দুইটি জমিতে ৮০ শতাংশ ধান আবাদ করেছেন। ধানের ভালো ফলনও হয়েছিল। সেচ খাল ভেঙে পানি ঢুকে তার সম্পূর্ণ ধান মাটিতে মিশে গেছে।

পশ্চিম বাইশপুর গ্রামের তাফাজ্জল হোসেন (৫৫) জানান, কয়েকদিন ধরে ওয়াপদার লোকেরা অতিরিক্ত পানি ছাড়ছে। কৃষকের পাকা ধানে পানির কোনও প্রয়োজন নেই। তাই অতিরিক্ত পানির চাপে ক্যানেল ভেঙে গেছে।

ভেঙে যাওয়া ক্যানেল

ইছামতি (ছয়টি পানি ব্যবস্থাপনা দলের গঠিত কমিটি) পানি ব্যবস্থাপনা অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি খাজা আহাম্মেদ বলেন, ‘বালুচর অংশে সেচ ক্যানেল ভেঙে যাওয়ার পর উদ্দমদী সেচ পাম্পের মেশিন বন্ধ করার ব্যবস্থা করি। সেচ খাল ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে জানানোর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন, উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) সালাউদ্দিন আহাম্মেদকে বেশ কয়েকবার ফোন করার পরও উত্তর পাইনি।’

মেঘনা-ধনাগোদা পওর বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জামাল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটি আমার অধীনে নয়। এ এলাকা আমাদের উপসহকারী প্রকৌশলী সালাউদ্দিন সাহেবের এলাকা। খবর পেয়ে আমরা সবাই ঘটনাস্থলে এসেছি। ৭-৮ কিলোমিটার ক্যানেলের পানি এখন এ ভাঙা অংশ দিয়ে ঢুকছে। এ পানি সরতে হয়তো আজ সারারাত লাগবে। ক্যানেলের পানি না কমলে কাজ করা যাবে না। এখানে বেশি ফসলি জমি নেই। বাড়িঘর আছে। বেশি একটা ক্ষতি হয়নি। ক্যানেল ভেঙে যে পানি জমিতে ঢুকেছে, তা দুই-একদিনের মধ্যেই ড্রেনেজ খালে চলে যাবে। এতেও যদি না হয়, তাহলে অন্য ব্যবস্থা নেবো।’ এতে ধানের ক্ষতি হবে না বলেও তিনি দাবি করেন।

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আক্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে এসেছি। সকালে কাজ শুরু হবে। কাজ শুরু না হওয়া পর্যন্ত আমি এখানে আছি। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। দেখা যাক আল্লাহ ভরসা।’