চট্টগ্রামে গ্যাস লাইনে বিস্ফোরণ, নিহত ৭

বিস্ফোরণের পর ধসে যাওয়া দেয়ালচট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটা এলাকায় গ্যাস লাইনের রাইজার বিস্ফোরণে সাত জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। রবিবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে পাথরঘাটার বড়ুয়া ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিসের আগ্রাবাদ স্টেশনের সহকারী পরিচালক পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দি এ তথ্য জানান।

নিহতদের মধ্যে চার জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- স্কুল শিক্ষক অ্যানি বড়ুয়া (৪৩), রিকশাচালক নুরুল ইসলাম, ফারজানা আক্তার ও তার ছেলে আতিকুর রহমান শুভ। আহত ১০ জনের মধ্যে ৬ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- আব্দুল হামিদ, মোহাম্মদ ইউছুপ, তিশা গোমেজ, অর্পিতা, সন্ধ্যারাণী ও মোহাম্মদ নাজির (৬৫)।

গ্যাস লাইনে বিস্ফোরণের পর দেয়াল ভেঙে পড়ে

বড়ুয়া ভবনটির সামনের পান দোকানদার মঞ্জুর আলম জানান, সকাল পৌনে ৯টার দিকে বিকট শব্দ শোনেন তিনি। এর পরপরই ওই ভবনটির দেয়াল ধসে তার দোকানের পাশে জনতা ফার্মেসির সামনে আছড়ে পড়ে। পরে তিনি দেখতে পান তার দোকানের আশেপাশে কয়েকজন পড়ে আছে। এসময় অনেকেই এসে হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে বেশিরভাগই পথচারী। 

বিস্ফোরণের পর উৎসুক জনতার ভিড়

ঘটনার সময় জনতা ফার্মেসিতে ঝাড়ু দিচ্ছিলেন স্টাফ অনুপম ঘোষ। তিনি জানান,  ফার্মেসির ভেতরে ঝাড়ু দিচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ বিকট শব্দ হয়ে দেয়াল ধসে দোকানের সামনে পড়ে। এতে ফার্মেসির সামনের অংশ ভেঙে যায়। তিনি ভেতরে থাকায় তার তেমন কোনও সমস্যা হয়নি। বের হয়ে দেখেন রাস্তার পাশে কয়েকজন পড়ে আছেন। এর মধ্যে চার-পাঁচ জনকে তিনি মৃত অবস্থায় পান। 

তিনি আরও জানান, এদের মধ্যে একজন পিএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। এছাড়া সাত-আট বছরের এক শিশুকে তারা উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
ফার্মেসির মালিক টিটু কুমার নাথ বলেন, আমি দোকানে ছিলাম না। বাসা থেকে বিকট শব্দ শুনে দোকানের সামনে এসে দেখি, রাস্তায় অনেকেই পড়ে ছিল। আমরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই।

এদিকে পাশের ভবনের তৃতীয় তলার বাসিন্দা সজল কান্তি পাল জানান, বিস্ফোরণের বিকট শব্দে তাদের দরজা ভেঙে পড়ে গেছে। এছাড়া তাদের ওই ভবনের অনেক ঘরের জানালা ভেঙে গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের আগ্রাবাদ স্টেশনের সহকারী পরিচালক পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বড়ুয়া ভবনের সামনে গ্যাস লাইনের রাইজার বিস্ফোরণের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৭ জনকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এদের মধ্যে সাত জন মারা গেছেন বলে শুনেছি। বিস্ফোরণের কারণে একটি দেয়াল ধসে পড়েছে। আমরা সেটি অপসারণ করে আর কেউ হতাহত আছে কিনা দেখছি।’
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পাথরঘাটা গ্যাস লাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাত জনকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেছেন। অন্যদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’