মালয়েশিয়ায় নিখোঁজ মিজানের খোঁজ চায় পরিবার

মিজানের পরিবার
জীবিকার তাগিদে মালয়েশিয়া গিয়ে নিখোঁজ রয়েছেন চাঁদপুরের কচুয়ার মিজানুর রহমান মোল্লা (৫০)। প্রায় ৬ মাস ধরে তার কোনও খোঁজ পাচ্ছে না স্ত্রী-সন্তান। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির খোঁজ না পেয়ে দিশেহারা হতদরিদ্র পরিবারটি। অনাহারে-অর্ধাহারে কাটছে তাদের দিন। মিজান কাজ করতেন মালয়েশিয়ার কোতরাইয়া বাংলা মার্কেট কেয়াল সেন্টারে। 

স্বজনরা জানান, ২০০৯ সালে মিজান প্রথম মালয়েশিয়া যান। ২০১৪ সালে তিনি দেশে আসেন। এরপর তিনি কয়েক মাস থেকে আবার পাড়ি জমান মালয়েশিয়ায়। সর্বশেষ স্বজনদের সঙ্গে কথা হয় মার্চে। তখন তিনি তার স্ত্রী হনুফা বেগমকে জানান, তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ভিসা লাগিয়েছি। আশা করি, দ্রুত কাজ হয়ে যাবে।
হনুফা বেগম বলেন, ‘গত ছয় মাস ধরে আমার স্বামীর কোনও খোঁজ পাচ্ছি না। তিনি যে রুমে থাকতেন সেখান থেকে অন্য রুমে চলে যান। রমজানের কয়েকদিন আগে আমার সঙ্গে কথা বলেন। এরপর সেখান থেকেও চলে যান। এরপর থেকে আর আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই।’
তিনি জানান, তার স্বামী এক মালয়েশিয়ানের মাধ্যমে তার ওয়ার্ক পারমিট রিনিউ করতে দিয়েছেন। কাগজপত্র এসেছে কিন্তু তার খোঁজ নেই। এ অবস্থায় তার সন্ধানের জন্য সরকার এবং ওই এলাকার বাংলাদেশি প্রবাসীদের অনুরোধ জানাই।
তিনি বলেন, ‘আমার দুটো মেয়েকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। একমাত্র ছেলে মাদ্রাসায় পড়ে। কতকষ্টে চলছি, তা একমাত্র আল্লাহই জানেন। এখন ঠিকমতো দু’বেলা খাবার জোগাড় করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। ছেলেকেও পড়ালেখার খরচও দিতে পারছি না। এখন শুধু চাই, আল্লাহ যেন আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দেন।’

মিজান

মিজানের বাবা সুলতান মোল্লা বলেন, ‘আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছি, কিন্তু কোনও খোঁজ পাচ্ছি না। সে কোথায় আছে, কী হালে আছে বা নাই তা জানতে চাই। আমার ছেলের সন্ধান দিতে আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাই।’
মিজানের পরিচিত প্রবাসী আবুল কাশেম বলেন, নিখোঁজের দুই-তিন দিন আগে আমি বাঙালিদের কাছ থেকে টাকা উঠিয়ে দেড়শ’ টাকা দেওয়ার পর তিনি একশ’ টাকা বাড়িতে পাঠায়। মিজান মালয়েশিয়ার কোতরাইয়া বাংলা মার্কেট কেয়াল সেন্টারে ডেইলি হাজিরা হিসেবে কাজ করতো। ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এক মাইয়ের মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট করে। এখন তিনি কোথায় আছেন আমরা জানি না। আমরা যদি সন্ধান পেতাম তাহলে একটা কিছু করার চেষ্টা করতাম। যদি তিনি জেলেও থাকেন সন্ধান পেলে আমরা কিছু করার চেষ্টা করতাম।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান বলেন, কিছু কাগজপত্রসহ তার স্বজনদের প্রবাসী কল্যাণে যোগাযোগ করতে হবে। তাহলে আমরা তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। প্রয়োজনে আমরা দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।