‘ঋণের টাকার জন্য বন্ধুকে খুন, লাশ বস্তায় ভরে ঢাকায় পাঠানোর চেষ্টা’

চট্টগ্রামদশ দিন আগে চট্টগ্রাম নগরীর অলঙ্কার মোড় এলাকা থেকে মৃতদেহ উদ্ধার হওয়া বিকাশ এজেন্ট বিজয় কুমার বিশ্বাস হত্যার ঘটনায় আব্দুর রহমান নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডি’র (চট্টগ্রাম মেট্রো) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে শুক্রবার আব্দুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয় বলে তিনি জানান।

গ্রেফতার আব্দুর রহমান গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানার গোলাবাড়িয়া এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে। নিহত বিজয় কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। ওই বন্ধুত্বের সূত্র ধরে বিজয়ের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিল আব্দুর রহমান, সেই টাকা পরিশোধ করতে বলায় তাকে হত্যা করে আব্দুর রহমান খুন করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের পরদিন ১৫ অক্টোবর মামলা দায়ের করার পর গত ২২ অক্টোবর সিআইডিকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দায়িত্ব গ্রহণের পরদিন শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) আমরা আসামি আব্দুর রহমানকে গ্রেফতার করি। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি আমাদের কাছে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছে। ঋণ নেওয়াকে কেন্দ্র করেই বিজয় কুমার বিশ্বাসকে খুন করা হয় বলে সে আমাদের জানায়।’

সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, ‘পতেঙ্গা এলাকার নেভী ওয়েল ফেয়ার মার্কেটে ব্যবসা করতে গিয়ে নিহত বিজয় কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে আসামি আব্দুর রহমানের বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে ৮ থেকে ৯ মাস আগে আব্দুর রহমান দেড় লাখ টাকা ঋণ নেন বিজয় কুমার বিশ্বাসের কাছ থেকে। ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য বিজয় তাকে চাপ প্রয়োগ করে।  গত ১৪ অক্টোবর বিজয় টাকার জন্য আব্দুর রহমানের অফিসে গেলে দুই জনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ইন্টারনেটের তার পেঁচিয়ে আব্দুর রহমান তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।’

শাহনেওয়াজ খালেদ আরও বলেন, ‘বিজয়কে শ্বাসরোধে হত্যার পর ওই দিন তার মরদেহ আব্দুর রহমান তার অফিসে রেখে দেন। এরপর তার মরদেহ প্রথমে চটের বস্তায়, এরপর ওই চটের বস্তা প্লাস্টিকের বস্তায় ঢুকিয়ে সেটি ঢাকায় পার্সেল করে পাঠানোর জন্য অলঙ্কার মোড়ে নিয়ে যায়। পরে ঢাকায় পার্সেল না পাঠিয়ে মরদেহটি ওই এলাকার আলিফ হোটেলের গলিতে ফেলে চলে আসে। পরে স্থানীয়রা বিজয় খুনের ঘটনায় আব্দুর রহমানকে সন্দেহ করলে সে গা ঢাকা দেয়। এরপর সৈয়দপুর পালিয়ে যায় সে। পরে সেখানে থেকে তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর গোলাবাড়িয়া এলাকায় চলে যায়। সম্প্রতি আব্দুর রহমান তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হস্তান্তর করতে পুনরায় চট্টগ্রাম আসে। পরে খবর পেয়ে আমার তাকে গ্রেফতার করি।’

প্রসঙ্গত, গত ১৫ অক্টোবর অলঙ্কার মোড় থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় বিজয় কুমার বিশ্বাসের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বিজয়ের স্বজনেরা এসে তার মরদেহ শনাক্ত করে। এরপর এই ঘটনায় ওই দিন তার বড় ভাই সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে পাহাড়তলী থানায় মামলা দায়ের করেন।