কখনও বিসিএস কর্মকর্তা বা পুলিশ, কখনও সাংবাদিক!

বিসিএস কর্মকর্তা, পুলিশ-উপসচিব-নৌবাহিনীর কর্মকর্তা আবার কখনও সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারণা করতেন মোজাম্মেল হক (৪৩)। অবশেষে জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষর ও সিলযুক্ত ভুয়া সুপারিশপত্র তৈরির ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট থানার কামালগেট এলাকা থেকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গ্রেফতার মোজাম্মেল কখনও বিসিএস কর্মকর্তা, পুলিশ-উপসচিব-নৌবাহিনীর কর্মকর্তা আবার কখনও সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারণা করতেন।

গ্রেফতার মোজাম্মেল হক চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা গ্রামের হাজী আব্দুল হকের ছেলে। বাসা নগরীর আলকরণ এলাকায়।

ওসি নেজাম উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মর্জিনা আক্তার নামে এক নারীর ছেলেকে সরকারি মুসলিম হাইস্কুলে ভর্তি করে দেওয়ার কথা বলে ১৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন মোজাম্মেল। পরিবর্তে মোজাম্মেল তাকে জেলা প্রশাসক মুমিনুর রহমান স্বাক্ষরিত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, চট্টগ্রাম সিলযুক্ত মর্জিনা আক্তার পক্ষে ছেলের নাম, ঠিকানা ও ভর্তির লটারির আইডিসহ লিখিত একটি আবেদন দেন এবং জানান ছেলের স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করেছেন। তবে মর্জিনা আক্তার মোজাম্মেল হকের দেওয়া পত্রটি মুসলিম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নিকট উপস্থাপন করলে এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে উক্ত আবেদনের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে বলেন। পরে সেখানে গেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দায়িত্বরত লোকজন উক্ত আবেদন জাল বলে জানান। এ ঘটনায় মর্জিনা আক্তার থানায় মামলা দায়ের করলে রবিবার রাতে মোজাম্মেলকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, মোজাম্মেলের বিভিন্ন নাম ও পদবিতে অন্তত ১০টি ভিজিটিং কার্ড আমরা পেয়েছি। মোজাম্মেল বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের ভিজিটিং কার্ড সংগ্রহ করতেন। নাম-পদবি সব ঠিক রেখে শুধু মোবাইল নম্বর বদলিয়ে একই ধরনের কার্ড তিনি তৈরি করেন। সেই কার্ড দেখে সে যে ভুয়া সেটা বোঝার কোনও উপায় নেই। এভাবেই মোজাম্মেল প্রতারণা করে বেড়াতেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোজাম্মেল জানিয়েছেন, ২০০৮ সালে বোয়ালখালী থানায় মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের হয়েছিল। সে নিজেকে ২৫তম বিসিএস’র পুলিশ ক্যাডার হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে। কয়েকদিন আগে এই পরিচয়ে কাস্টমসের এক কর্মকর্তাকে ফোন করে গাড়ি ছাড়ানোর তদবির করেন। ওই কর্মকর্তা আমাদের একজন এএসপির স্ত্রী। তিনি বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন।