এবার ফেসবুক লাইভে কাদের মির্জার আত্মহত্যার হুমকি

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়েছি, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে যেভাবে রাতের অন্ধকারে বাসা থেকে জোর করে হাসপাতালে নিয়ে গেছে, একইভাবে কিছু করার জন্য আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন ওবায়দুল কাদের সাহেব ও ওনার স্ত্রী। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি দেশবাসীকে জানিয়ে দিচ্ছি, এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আমি সঙ্গে সঙ্গে আত্মহত্যা করবো। আমার ওপর যদি কিছু ঘটাতে আসেন, আমি বলে দিচ্ছি আমি আত্মহত্যা করবো। আমি কোনও অসত্যের কাছে মাথা নত করবো না।'

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) বেলা ১১টায় ফেসবুক লাইভে এসে তিনি এ হুমকি দেন। কাদের মির্জা বলেন, সব শিয়ালের এক ডাক। ঢাকা থেকে শুরু করে এলাকা পর্যন্ত আজ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। আজ আল্লাহ, দলের কিছু ত্যাগী নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ ছাড়া কেউ আমার সঙ্গে নেই। আমার সত্যবচনের পর আস্তে আস্তে অনেকেই আমার কাছ থেকে সরে গেছেন। এ জন্য আমি আতঙ্কিত নই, আমি আরও উজ্জীবিত হচ্ছি। যারা অস্ত্রবাজির সঙ্গে জড়িত, টেন্ডারবাজির সঙ্গে জড়িত, যারা গরিব ভূমিহীনের জমি দখল করেছেন, তারা আজ কেউ আমার সঙ্গে নেই।

বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদের শোকসভা বন্ধ করে দেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, এখানকার নেতা যিনি ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর কৌঁসুলি হিসেবে কাজ করেছেন, ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর সংবিধান প্রণয়নের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, সেই মানুষটি মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুর পর রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করায় মনে হয় আল্লাহ অসন্তুষ্ট হবেন। সে কাজটি প্রশাসনের মাধ্যমে কে বা কারা করেছেন, সেটা আপনারা খবর নেন।

তিনি আরও বলেন, ‘কী করবেন? মেরে ফেলবেন? জেলে দেবেন? লাঞ্ছিত করবেন? আর কী বাকি আছে? দুই হাজার গুলি একতরফা আমার পৌরসভায় আমার বিরুদ্ধে করেছেন। ওবায়দুল কাদের সাহেব, আপনার লেলিয়ে দেওয়া ফেনীর নিজাম হাজারী, নোয়াখালীর একরামুল চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের নেতৃত্বে এখানকার সব জাসদ দুই হাজার গুলি আমার পৌরসভায় একতরফা করেছেন।'

কাদের মির্জা বলেন, দুর্ভাগ্য আমাকে কেউ পছন্দ করছেন না, আমি সত্য কথা বলাতে। এটাই হচ্ছে আসল কথা। ‘কী করবেন? করেন। যা করার করবেন, দেরি করছেন কেন? পুলিশ দিয়ে নির্যাতন, আমার ছেলেদের বাড়িতে বাড়িতে অত্যাচার, অস্ত্র ঢুকিয়ে দিয়ে মামলা দিচ্ছেন। ওবায়দুল কাদের এবং তার স্ত্রী প্রশাসনকে বলে দিয়েছেন, যে তার সঙ্গে যাতে চতুর্দিকে একটা লোকও না থাকে, সে ব্যবস্থা করো।’

তিনি আরও বলেন, এটা কী দেশ, কী আইন? কোথায় গিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা? আজ কি বাংলাদেশে মানবাধিকার সংস্থা নেই? বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা আজ কোথায়? এটা আমি প্রশ্ন করতে চাই।

পৌর মেয়র কাদের মির্জা আরও বলেন, আলাউদ্দিন হত্যা পৌরসভা কার্যালয় এলাকায় হয়েছে। আমাদের কাছে কোনও অস্ত্র ছিল না। আমি আল্লাহকে সাক্ষী করে বলতে পারি, আমি যদি কারও হাতে অস্ত্র দিয়ে থাকি, আল্লাহ আমাকে এখনই মৃত্যু দিন। আমার এখান থেকে কোনও গোলাগুলি হয়নি। পুলিশ এবং তারা সংঘর্ষ করে এই ছেলেকে মেরেছে। এক সিএনজি ড্রাইভার। এটা পরিকল্পিত।

তিনি আরও বলেন, আজ বিচার করার কেউ নেই। সবাইকে আমি চিনি। যারা অপরাজনীতির হোতা, তারা আজ সব পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কোনও সৎ নেতা, কোনও ত্যাগী নেতা আজ আওয়ামী লীগে হয়তো নগণ্য জায়গায় থাকতে পারে, অধিকাংশ জায়গায় অপরাজনীতির সঙ্গে যারা জড়িত, তারা নেতৃত্বে আছেন।

কাদের মির্জা বলেন, আমাকে ভেঙে ফেলতে পারবেন, কিন্তু আমি মচকাবো না। দুই হাজার বুলেট আমাকে উদ্দেশ করে নিক্ষেপ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কথা, আমাকে দাবায়ে রাখতে পারবেন না। সাহস করে সত্য কথা বলে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

 

ভিডিও