গ্রেফতার এড়াতেই এএসআই সালাহ উদ্দিনকে হত্যা?

পুলিশের হাতে ধরা পড়লে জেল হবে, এই শাস্তি থেকে বাঁচতেই এএসআই সালাহ উদ্দিনকে মাইক্রোবাস চাপা দিয়ে হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। এই কারণে চোলাই মদবাহী মাইক্রোবাসটি থামানোর সংকেত দেওয়ার পর গাড়িচালক পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মোখলেসুর রহমান। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মাইক্রোবাস চালককে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

রবিবার (১৩ জুন) মোখলেসুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঘটনার পর আমরা ওই এলাকার কিছু সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেগুলো বিশ্লেষণ করে মাইক্রোবাস চালক ও গাড়িতে থাকা অন্যদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছি।’

নিহত পুলিশ সদস্য কাজী সালাহ উদ্দিন লক্ষ্মীপুর সদর থানার কাজী নাদের জামানের ছেলে। ২০১৮ সাল থেকে তিনি চান্দগাঁও থানায় এএসআই পদে কর্মরত ছিলেন। শুক্রবার (১১ জুন) ভোর ৪টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন মেহেরাজখানঘাটা পেট্রোল পাম্পের সামনে মাদকবাহী মাইক্রোবাস (রেজি. নম্বর-ঢাকা মেট্রো-চ-১৫-৩৬৬৫) চাপায় তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। ঘটনার পর চান্দগাঁও থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে সালাহ উদ্দিন মাইক্রোবাসটিকে থামার সিগন্যাল দিলে চালক গাড়ির গতি কমায়। তখন এএসআই সালাহ উদ্দিন গাড়িটির সামনে গেলে গতি বাড়িয়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায় চালক। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় মো. মাসুম আহমেদ তুহিন নামে আরও এক পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

মাইক্রোবাসের চালক পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে কিনা জানতে চাইলে মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি ঘটানোর ক্ষেত্রে মাইক্রোবাস চালকের পূর্ব কোনও পরিকল্পনা ছিল বলে আমাদের মনে হচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে আমরা মনে করছি মাইক্রোবাস চালক পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। তবে সে পুলিশ সদস্যদের হত্যা করতেই গাড়ি চাপা দিয়েছে। পুলিশ সদস্যরা গাড়ি থামানোর সংকেত দেওয়ার পর হয়তো সে পালানোর পথ খুঁজছিল। তখন সে পুলিশকে মেরে পালানোর পরিকল্পনা থেকে এএসআই সালাহ উদ্দিনকে চাপা দিয়েছে।’

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে মাইক্রোবাসটি রেখে চালক পালিয়ে যায়। সিসিটিভি ফুটেজে আমরা সেটিই দেখেছি। এ বিষয়ে এই মুহূর্তে আমরা কিছু বলতে চাইছি না। চালককে গ্রেফতার করার পর এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’

চান্দগাঁও থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘মাইক্রোবাসের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঠিক আছে। গাড়ির মালিকের পরিচয় পাওয়া গেছে। মাইক্রোবাস চালককে গ্রেফতার করাই এখন আমাদের লক্ষ্য। তাকে গ্রেফতারে কাজ শুরু করেছি। আশা করছি শিগগির তাকে গ্রেফতার করতে পারবো।’

আরও খবর: মাদকবাহী মাইক্রোবাসের ধাক্কায় প্রাণ গেলো পুলিশ কর্মকর্তার