রোহিঙ্গা তরুণীর পরিচয়পত্র তৈরি, সাবেক কাউন্সিলরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া পরিচয়পত্র, নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করার দায়ে সাবেক এক কাউন্সিলরসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (১৪ জুন) চট্টগ্রামে দুদক সমন্বিত কার্যালয়ে এ মামলা করা হয়। দুদক সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-২-এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মো. শরীফ উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইলসহ পাঁচ আসামি রোহিঙ্গা তরুণী অহিদাকে পাসপোর্ট পেতে সহযোগিতা করেন। প্রাথমিক তদন্তে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে এসেছে।’

মামলার আসামিরা হলেন– ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইল (৪৯), একই ওয়ার্ডের জন্ম নিবন্ধন সনদ সহকারী সুবর্ণ দত্ত, বাকলিয়া এলাকার বাসিন্দা পাসপোর্ট অফিসের দালাল মো. সিরাজুল ইসলাম, রোহিঙ্গা তরুণীর বাবা পরিচয় দেওয়া মোহাম্মদ ইসমাইল, মা পরিচয় দেওয়া মেহের জান ও রোহিঙ্গা তরুণী অহিদা।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ‘২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করতে গিয়ে রোহিঙ্গা তরুণী অহিদা আটক হন। ওইদিন তাকে পাসপোর্ট অফিসে নিয়ে আসা দালাল সিরাজুল ইসলামসহ দুই জনের আচরণ সন্দেহজনক হলে পাসপোর্ট অফিসের স্টাফরা তাদের আটক করেন। পরে রোহিঙ্গা সফটওয়ারে যাছাই করলে অহিদার আঙুলের ছাপ মিলে যায়। এই ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইলসহ পাঁচ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। তারা পরস্পর যোগসাজশে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয়তা সনদ ও জন্ম নিবন্ধন তৈরি করে এই রোহিঙ্গা তরুণীকে পাসপোর্ট তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন। মোহাম্মদ ইসমাইলের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে পাসপোর্ট করার জন্য অহিদা ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পাথরঘাটা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বরাবর আবেদন করেন। ১০ দিন পর ২৯ সেপ্টেম্বর তিনি সনদ পান। এরপর একইভাবে অহিদা গত ৭ নভেম্বর জন্ম নিবন্ধন করার জন্য আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল সনদ প্রদান করেন। এই ঘটনায় ওয়ার্ডের জন্ম নিবন্ধন সনদ সহকারী সুবর্ণ দত্ত রোহিঙ্গা তরুণীকে সহযোগিতা করেছেন। অপর দুই আসামি নিজেদের তরুণীর মা-বাবা পরিচয় দিয়েছেন। বাস্তবে তারা ওই তরুণীর মা-বাবা ছিলেন না।