সিরিয়াফেরত জঙ্গি শাখাওয়াত ফের ৩ দিনের রিমান্ডে

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য সিরিয়া ফেরত জঙ্গি শাখাওয়াত আলী লালুকে আবারও রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৫ জুন) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালত তাকে তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

নগর পুলিশের উপ-পরিদর্শক (কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট) রাছিব খান এ তথ্য জানিয়েছেন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘তিন দিনের রিমান্ড শেষে আজ শাখাওয়াতকে আদালতে হাজির করে আমরা তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করি। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।’

এর আগে গত শুক্রবার (১১ জুন) চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় আহলে হাদিস জামে মসজিদের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন শনিবার (১২ জুন) বিকালে তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হোসেন মোহাম্মদ রেজার আদালতে তুলে পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

গ্রেফতারের পর পুলিশ জানিয়েছিল, শাখাওয়াত যুদ্ধ করার জন্য চার বছর আগে বাংলাদেশ থেকে সিরিয়ায় যায়। এরপর গত মার্চ মাসে দেশে ফেরে। সিরিয়া থেকে চট্টগ্রামে আসার খবরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে দেশে থাকাকালে উল্লিখিত জঙ্গি সংগঠনের পক্ষে বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও সংহতির বিরোধিতা, জননিরাপত্তা বিঘ্ন এবং বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল, অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় উগ্রবাদী মতাদর্শ প্রচার করে। সে এসবের মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ কাজে নিয়োজিত ছিল।

শাখাওয়াতের জঙ্গি তৎপরতা সম্পর্কে আরও জানানো হয়, ২০১২ সাল থেকে শাখাওয়াত তার ভায়রা ভাই আরিফ এবং মামুনদের প্ররোচনায় জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়। তাদের সংগঠনের নেতা মোয়াজ (চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া)-সহ মনসুরাবাদ এলাকার হুজুর শফিক, চট্টগ্রাম লালখান বাজার এলাকার এসির দোকানে কর্মচারী ওমর ফারুকের সহায়তায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘আনসার আল ইসলাম’-এর সদস্যদের সংগঠিত করার লক্ষ্যে কাজ করছিল। সে বিভিন্ন মাধ্যমে জঙ্গিবাদী কার্যক্রম প্রচারে আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োজিত ছিল। পরবর্তী সময়ে সে বাংলাদেশ থেকে ২০১৭ সালে তুরস্ক যায়। তুরস্ক থেকে অবৈধ পথে সীমান্ত অতিক্রম করে সিরিয়ায় প্রবেশ করে দীর্ঘ ছয় মাস ‘হায়াত তাহরির আরশাম’-এর কাছ থেকে ভারী অস্ত্রশস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিয়ে সিরিয়ার ইদলিব এলাকায় যুদ্ধে অংশ নেয়। পরে সে সিরিয়া থেকে অবৈধ পথে সীমান্ত অতিক্রম করে তুরস্ক হয়ে ইন্দোনেশিয়ায় যায়। এরপর ইন্দোনেশিয়া থেকে শ্রীলঙ্কা হয়ে পুনরায় ইন্দোনেশিয়ায় গিয়ে বসবাস করে। ইন্দোনেশিয়ায় বসবাসকালে সে উগ্রবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করে।