২৫ হাজার পশু বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় খাগড়াছড়ির খামারিরা

আর এক সপ্তাহ পরেই ঈদুল আজহা। এই ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর পশু বেচা-কেনা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন সারাদেশের খামারি ও ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এবার করোনা সংক্রমণরোধে লকডাউনের কারণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। 

খাগড়াছড়িতে ছোট-বড় শতাধিক খামার রয়েছে। চলতি বছর এই জেলায় কোরবানির জন্য প্রায় ২৩ হাজার পশু প্রস্তুত করেছেন কৃষক ও খামারিরা। এর মধ্যে কৃষকরা প্রায় ১৩ হাজার, আর বাকি ১২ হাজার খামারিরা প্রস্তুত করেছেন। সারা বছর ধরে ভালো দামের আশায় পাহাড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশে লালন-পালন করা এসব পশু বিক্রি নিয়ে গভীর চিন্তায় পড়েছেন তারা।

মানিকছড়ি গচ্ছাবিল এলাকার কৃষক মনির হোসের বলেন, কোরবানিকে সামনে রেখে আটটি গরু ও পাঁচটি ছাগল লালন-পালন করেছেন তিনি। গরু-ছাগলকে প্রাকৃতিকভাবে আবাদ করা ঘাস ও ভুট্টা খাইয়েছেন। কৃত্রিম উপায়ে গরুর মোটাতাজা করেননি। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনটি গরু ও দুইটি ছাগল বিক্রি করেছেন মনির। 

খুব বেশি লাভও করতে পারেননি জানিয়ে তিনি বলেন, যদি বাকিগুলো ভালো দামে বিক্রি করতে পারেন, তাহলে হয়তো লাভ হবে। আর না পারলে লোকসান হবে।

খাগড়াছড়ি শহরের মনপুরা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ইমরান হোসেন বলেন, তার এলাকায় প্রায় ১০০ পরিবার আছে। অধিকাংশ পরিবার ইতোমধ্যে কোরবানির পশু কিনে ফেলেছেন। এ বছর কৃষক হতে বেশি গরু লোকজন সংগ্রহ করেছে।তবে আগামী এক সপ্তাহে বেচা-কেনা খুব বেশি হবে না বলে মনে করেন তিনি।

এ কে এগ্রো অ্যান্ড ডেইরি ফার্মের খামারি এমরান হোসেন বলেন, তার খামারে ১০০টি গরু আছে। কিন্তু লকডাউনের কারণে পশু বিক্রি করতে পারছেন না। সরকার এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন শিথিল করলেও, এই সময়ে সব গরু বিক্রি করা যাবে কি-না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। এখনও কোনও পশু বিক্রি হয়নি। বাজারে গরু তুলতে না পারলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে জানান তা।

খাগড়াছড়ি বাজারের ইজারাদার জামাল হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত বাজার হতে দেড় শতাধিক পশু বিক্রি হয়েছে। এবছর কোরবানির জন্য লোকজন কৃষকদের বাড়ি থেকে পশু সংগ্রহ করেছে। শুধু কৃষক-খামারি নয়, এবছর লোকসান হবে সব ইজারাদারের। 

খাগড়াছড়ি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. নুরুল আফসার বলেন, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে পশু বিক্রির উপজেলা পর্যায়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া ১৫ জুলাই থেকে সাত দিনের জন্য লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। ফলে কৃষক ও খামারিরা এখন তাদের পালন করা পশুহাটে তুলতে পারবে। এখন পর্যন্ত মানুষ খুব বেশি পশু ক্রয় করেনি। পুরো সপ্তাহে বিক্রয় উপযুক্ত পশু বাজারে তুললে বিক্রয় হবে বলে মনে করেন তিনি।