যার সাজা খেটেছিলেন মিনু, সেই কুলসুম গ্রেফতার

নামের মিল না থাকার পরও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বদলে মিনু আক্তার নামে এক নারীর সাজা ভোগের ঘটনায় মূল আসামি কুলসুম আক্তার ও তার এক সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) ভোরে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন লোহাগাড়া উপজেলার গোরস্থান মাঝের পাড়া আহাম্মদ মিয়ার বাড়ির আনু মিয়ার মেয়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত কুলসুম আক্তার (৪০) ও তার সহযোগী মর্জিনা আক্তার (৩০)।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আকাশ মাহমুদ ফরিদ। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালের জুলাই মাসে মোবাইলে কথা বলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নগরীর রহমতগঞ্জের একটি বাসায় পোশাককর্মী কোহিনুর আক্তার পারভীনকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। এরপর তার লাশ একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেন কুলসুম আক্তার। ওই ঘটনায় করা অপমৃত্যু মামলার তদন্ত শেষে আদালতে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ এনে প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ।

২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে তৎকালীন অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম আসামি কুলসুম আক্তারকে পারভীন হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। সেই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। 

ওই সাজা পরোয়ানায় কুলসুম আক্তারের পরিবর্তে মিনু আক্তার ২০১৮ সালের ১২ জুন কারাগারে যান। মিনু দুই বছর নয় মাস ১০ দিন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। এরপর বিষয়টি তার পরিবার আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতের নজরে আনলে জামিনে মুক্তি পান। গত ২৮ জুন রাতে বায়েজিদ লিংক রোডে দুর্ঘটনায় মিনু নিহত হন। মিনু নিহতের ঘটনাকে রহস্যজনক দাবি করে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ।

ওই সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, মিনুর মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। মাত্র ১৩ দিন আগে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। বাসা থেকে চার কিলোমিটার দূরে রাস্তায় মিনু সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন, নাকি অন্য কেউ মিনুকে হত্যা করেছে? এটি তদন্ত হওয়া উচিত। পরে এ ঘটনায় বায়েজিদ থানায় মামলা করে পুলিশ। মামলাটি তদন্তাধীন।