ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রলারডুবি

১৬ ঘণ্টা পর আরও এক শিশুর লাশ উদ্ধার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের লইসক্যা বিলে শতাধিক যাত্রী নিয়ে ট্রলারডুবির ঘটনায় আরও এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম নাশরা (৪)। শনিবার (২৮ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ডুবুরিদল।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পৈরতলা এলাকার হারিজ মিয়ার মেয়ে নাশরা। এ নিয়ে ট্রলারডুবির ঘটনায় লাশ উদ্ধারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২২ জনে। এখন পর্যন্ত ১৯ জনের পরিচয় মিলেছে। তাদের মধ্যে অধিকাংশ নারী ও শিশু। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) রাতে ১৮ জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে জেলার বিজয়নগরে লইস্কা বিলে বালুবোঝাই ট্রলারের ধাক্কায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় মধ্যরাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে নারী ও শিশুসহ ২১ জনের লাশ উদ্ধার করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল। পরে আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আবার উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। দুর্ঘটনাকবলিত নৌযানটি উদ্ধারের পর জানা যাবে, আর কেউ আটকা পড়ে আছে কি-না।

দুর্ঘটনাকবলিত নৌযানটি উদ্ধারে অভিযান চলছে

বিআইডব্লিউটিএ’র আশুগঞ্জ-ভৈরব নদী বন্দরের পরিবহন পরিদর্শক (ট্রাফিক) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, নারায়ণগঞ্জের বিআইডব্লিউটিএ’র চার সদস্যের একটি দল সকাল সাড়ে ৮টা থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। সাড়ে ৯টা থেকে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল। দুর্ঘটনাকবলিত নৌযানটিকে উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত কার্যক্রম চলবে। 

তিনি আরও বলেন, বিজয়নগর ও জেলা শহরের চলাচলকারী প্রত্যেক নৌযানকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। এতদিন নিবন্ধনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। যে কারণে সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। গত তিন বছর আগে আশুগঞ্জ নৌ-বন্দরে বিআইডব্লিউটিএর দাফতরিক অফিস করা হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন নৌ পথে চলাচলকারী জলযানগুলোর নিবন্ধনের আওতায় আনা হচ্ছে।

নদী নিরাপত্তাবিষয়ক সামাজিক সংগঠন নোঙর বাংলাদেশের সভাপতি সুমন শামস বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য আমরা বারবার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু সেটা মানা হচ্ছে না। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসনের টনক নড়ে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনায় নিহতদের জন্য ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। একটা মানুষের মূল্য ২০ হাজার টাকা হতে পারে না। জেলা প্রশাসন তদন্ত কমিটি করার কথা বলেছেন। তদন্ত কমিটি শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখে না।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান বলেন, এই নৌ পথে চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনার জন্য বলা হয়েছে। পাশাপাশি ঘাটগুলো থেকে যেসব নৌযান চলাচল করছে, ঘাটগুলো কারা পরিচালনা করছে সে বিষয়ে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেকের দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।