ধর্ষণচেষ্টা মামলা তদন্তে ঘুষ গ্রহণ, এসআই প্রত্যাহার

ধর্ষণচেষ্টার মামলা তদন্তের কথা বলে বাদীর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে কুমিল্লার দেবিদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওমর ফারুককে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এসআই ওমর ফারুক মামলা তদন্তের কথা বলে ঘুষ নিয়েছেন—ভুক্তভোগী কিশোরীর মায়ের এমন অভিযোগের একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রেক্ষিতে তাকে ‘স্বাভাবিক বদলি’ দেখিয়ে প্রত্যাহার করে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে নেওয়া হয়েছে।

দেবিদ্বার-ব্রাহ্মণপাড়া থানার সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আমির উল্লাহ বলেন, কিশোরী ধর্ষণচেষ্টা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ওমর ফারুককে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়নি। এটা স্বাভাবিক বদলি। জেলা পুলিশ সুপারের মৌখিক নির্দেশে তাকে পুলিশ লাইন্সে নেওয়া হয়।

এদিকে শনিবার (২৮ আগস্ট) রাতে তাৎক্ষণিক বদলির বিষয়ে একটি চিঠি কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় হতে দেবিদ্বার থানায় আসে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা। এসআই ওমর ফারুক নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ভিডিওতে ভুক্তভোগী কিশোরীর মা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের এভাবে বারবার মারধর করেছে (আসামিরা)। আমি বারবার বলেছি, আমাদের জানের নিরাপত্তা নাই। আসামি ধরেন না হয় মামলা রেফার্ড করেন। সে (এসআই ওমর ফারুক) কোনোটাই করে না। আসলেই বলে আমাদের টাকা লাগবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তিনবার আসছে তিনবারই উনাকে (তদন্ত কর্মকর্তা) টাকা দিছি। একবার চার হাজার, একবার তিন হাজার, আরেকবার আড়াই হাজার টাকা দিয়েছি।’

গত ২০ আগস্ট দেবিদ্বারের কুরছাপ গ্রামে ধর্ষণচেষ্টার মামলা তুলে নিতে অভিযুক্ত হাসান ও তার বড় ভাই কাউছার আহম্মেদসহ অন্য আসামিরা ভুক্তভোগী কিশোরী ও তার মা-বাবাকে প্রকাশ্যে লাঠিপেটা করেন। লাঠিপেটা সময় ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে নির্যাতনের ঘটনায় ২৬ আগস্ট রাতে দেবিদ্বার থানায় হাসান, তার বড় ভাই কাউছার, তাদের বাবা নুরুল ইসলাম ও মোস্তাফা কামালসহ আট জনকে আসামি করে মামলা করেন ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা।

মামলা তদন্ত করছিলেন এসআই ওমর ফারুক। গত শুক্রবার জেলার বিভিন্ন জায়গায় র‌্যাব-পুলিশ অভিযান চালিয়ে চার জনকে গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনার মূল আসামি কাউছার ও হাসানকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি।