চিৎমরমে চেয়ারম্যান প্রার্থী হত্যা: ইউপি নির্বাচন পিছিয়ে তৃতীয় ধাপে

স্থানীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পাহাড়ের রাজনৈতিক অঙ্গন। শনিবার (১৬ অক্টোবর) দিবাগত মধ্যরাতে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম ইউনিয়নে (ইউপি) আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী নেথোয়াই মারমাকে (৫৬) নিজ বাসায় গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর নতুন তারিখ অনুযায়ী তৃতীয় ধাপে এই ইউপির নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপে রাঙামাটির ১১টি ইউনিয়ন পরিষদে আগামী ১১ নভেম্বর নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। 

এর আগেও স্থানীয় নির্বাচনেও বেশ কিছু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে দায়ী করে আসছে। তবে এ বিষয়ে জনসংহতি সমিতির কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনায় চিৎমরম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময়সীমার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটির সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘চিৎমরম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী নেথোয়াই মারমাকে গুলি করে হত্যা করার বিষয়টি আমি নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশন থেকে দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চিৎমরম ইউপি নির্বাচন স্থগিত করেছে এবং নির্বাচনের নতুন তারিখ তৃতীয় ধাপে আগামী ২৮ নভেম্বর ঘোষণা করেছে।’

রাঙামাটির সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নেথোয়াই মারমা হত্যা ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলের আঞ্চলিক দলগুলো বেছে বেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। গতকাল তারা নেথোয়াই মারমাকে হত্যা করেনি, হত্যা করেছে দেশের গণতন্ত্রকে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘নেথোয়াই মারমার অপরাধ ছিল গণতান্ত্রিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে প্রার্থী হয়েছেন। এটাই তার বড় অপরাধ। ইতোপূর্বে জুরাছড়ির উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অরবিন্দ চাকমা, বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরেশ তঞ্চঙ্গ্যাসহ অসংখ্য নেতাকর্মীর ওপর তারা হত্যাযজ্ঞ চালায়।’ 

নেথোয়াই মারমার লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান চন্দ্রঘোনা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী। তিনি জানান, নেথোয়াই মারমা দীর্ঘ ১৪ মাস পর বাড়ি গিয়েছিলেন। নিরাপত্তার কারণে তিনি দীর্ঘদিন বাড়িও যাননি। শনিবার দলীয় মনোনয়ন জমা দিয়ে প্রচারণার জন্য বাড়ি গিয়ে হত্যার শিকার হন। এখন পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও মামলা দায়ের করা হয়নি। সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষার পরই মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, চিৎমরম ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি নেথোয়াই মারমা শনিবার মনোনয়ন জমা দিয়ে বাড়ি যান। রাত ১২টার দিকে তাকে ঘরের দরজা ভেঙে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী গুলি করে হত্যা করে।

আরও খবর: দিনে মনোনয়নপত্র জমা, রাতে গুলিতে আ.লীগ প্রার্থীর মৃত্যু