পিলাক খাল থেকে কোটি টাকার বালু তুলেছেন প্রভাবশালীরা

খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের পিলাক খালে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের হিড়িক। জেলা প্রশাসনের ইজারা ব্যতীত নদী-খালে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ হলেও মানছে না অসাধু বালুখেকো চক্র। পিলাক খালের সেতুর পাশে প্রকাশ্যে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে চলছে বালু উত্তোলন।

সরেজমিনে এবং উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় জেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত দুটি বালুমহাল রয়েছে। এর একটি সোনাইপুল, অন্যটি তৈছালা এলাকায়। তবে নির্ধারিত দুটি বালুমহাল ছাড়াও রামগড়ের ১২-১৫টি স্পটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে। এর মধ্যে পিলাক খাল ব্রিজের পাশে ছোট-বড় তিনটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

পিলাক খাল থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করে সংরক্ষণ

ড্রেজারশ্রমিক নুরুন্নবী, লিটন, নুরুল হক, ইউসুফের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় দেড় মাস ধরে তিনটি ড্রেজারে পিলাক খাল থেকে প্রতিদিন বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রায় পাঁচ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হয়েছে। যার বাজারদর আনুমানিক কোটি টাকা। শ্রমিকরা জানান, উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুসারী জিয়া এবং নয়ন মিলে বালুর পয়েন্ট নিয়ন্ত্রণ করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রামগড় পৌরসভার এক জনপ্রতিনিধি বলেন, বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সবাই জানেন। অবৈধ জানার পরও রহস্যজনক কারণে কেউ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। 

রামগড় পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাঈম হাসান জানান, ঘাটে তারা বালু তুলছেন উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারির নেতৃত্বে। রামগড় পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী জিয়া উদ্দিন জিয়াসহ তারা গত দেড় মাসে প্রায় কোটি টাকার বালু তুলে জমা করেছেন। ৪-৫ লাখ টাকার বালু তারা ইতোমধ্যে বিক্রিও করেছেন। বালুমহালটি বৈধ না অবৈধ এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি রামগড় উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারি এই বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি না হলেও বালুমহালটি অবৈধ এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে জানান। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করারও অনুরোধ করেন তিনি।

রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা মজুমদার বলেন, রামগড় উপজেলায় দুটি বালুমহাল আছে। পিলাক খালের বালুমহাল ইজারার তালিকায় নেই। প্রভাবশালীরা যদি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, রামগড়ে ইজারাকৃত দুটি বালুমহালের বাইরে অন্য কোনও জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করা অবৈধ। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। এ জন্য খুব শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে।