কুমিল্লায় মণ্ডপ ভাঙচুরের ঘটনায় আরও এক মামলা 

কুমিল্লা নগরীর নানুয়াদিঘির পাড়ে পূজামণ্ডপে ভাঙচুরের ঘটনায় আরও এক মামলা করা হয়েছে। পাশাপাশি হনুমানের কোলে কোরআন রেখে সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ঘটনায় করা মামলাটি বুধবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সহিংসতার ঘটনায় মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) গভীর রাতে পূজামণ্ডপ কমিটির পক্ষ থেকে ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনওয়ারুল আজিম।

পুলিশ জানায়, কুমিল্লায় কোরআন অবমাননা, পূজামণ্ডপ ভাঙচুর ও মন্দিরে হামলার ঘটনায় কোতোয়ালি, সদর দক্ষিণ, দাউদকান্দি ও দেবিদ্বার থানায় ১২টি মামলা হয়েছে। ১২ মামলায় এজাহারনামীয় ৯২ জনসহ ১১০২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন ৭২ জন। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দলীয় পরিচয়ে বিএনপির ৩৬ জন এবং জামায়াত ও শিবিরের ১৬ নেতাকর্মী।

সিআইডি কুমিল্লা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাত দিনের রিমান্ডে থাকা ইকবাল হোসেন, ৯৯৯-এ পুলিশকে ফোন করা ইকরাম এবং দারোগাবাড়ি মাজারের সহকারী খাদেম হুমায়ুন কবির ও ফয়সাল আহমেদকে সিআইডি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। 

রিমান্ডে থাকা চার আসামি মণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখা এবং হনুমানের মূর্তি থেকে নেওয়া গদা উদ্ধারের বাইরে নতুন তথ্য দিয়েছেন কিনা এই বিষয়ে কিছুই জানায়নি সিআইডি।

ওসি আনওয়ারুল আজিম বলেন, ১৩ অক্টোবর নানুয়াদিঘির উত্তর পাড়ের অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখা ও পরবর্তীতে ভাঙচুরসহ সহিংসতার ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে পূজামণ্ডপ কমিটির পক্ষ থেকে স্থানীয় যুবক কান্তি মদন মিঠুন বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন। এই মামলায় ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

কুমিল্লা সিআইডির পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজওয়ান বলেন, বুধবার দুপুরে মামলার সব ডকুমেন্টস আমাদের বুঝিয়ে দেয় পুলিশ। মামলাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় সতর্কতার সঙ্গে তদন্তকাজ চলছে।

গত ১৩ অক্টোবর নগরীর নানুয়াদিঘির পাড় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় নগরের কয়েকটি পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এর জেরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, নোয়াখালীর চৌমুহনী, রংপুরের পীরগঞ্জে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশের সংগ্রহ করা সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে পূজামণ্ডপে কোরআন রাখা প্রধান অভিযুক্ত ইকবালকে শনাক্ত করে। ২১ অক্টোবর ইকবালকে কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২২ অক্টোবর তাকে কুমিল্লায় এনে ২৩ অক্টোবর আদালতে হাজির করা হয়। আদালত ইকবাল, মাজারের দুই খাদেম ও ৯৯৯-এ কল করা ইকরামের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।