কক্সবাজারে হোটেল-রেস্তোরাঁর বুকিং খাতা চেক করবে পুলিশ

পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা অসাধু ব্যবসায়ীদের ধরতে মাঠে নেমেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে পর্যটকদের সচেতন করতে মাইকিং করা হচ্ছে। পাশাপাশি হোটেল-মোটেলের বুকিং খাতা চেক করে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেবে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

এদিকে, পর্যটকদের অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত হোটেল-মোটেল জোনে অভিযান চালানো হয়েছে।

গত দুই দিন ধরে কঠোর অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।

আরও পড়ুন: কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল, ডাল-ভাত ৪০০

মহিউদ্দিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তিন দিনের ছুটিতে বিপুল সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে ভ্রমণে আসেন। এই সুযোগে কিছু হোটেল ও রেস্টুরেন্ট মালিক পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছেন। বিশেষ করে সাধারণ হোটেল ও রেস্টুরেন্ট মালিকরা পর্যটকদের কাছ থেকে খাবারের দাম অতিরিক্ত নিচ্ছেন। এ অবস্থায় গত দুই দিন ধরে ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। অভিযানের সময় অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। যেসব পর্যটকের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়েছিল, তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিছু পর্যটক কক্সবাজার ত্যাগ করায় তাদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করতে পারেনি ট্যুরিস্ট পুলিশ।’

কক্সবাজারে হোটেল-মোটেল জোনে অভিযান, দুটি হোটেলকে জরিমানা

ছুটি শেষ হওয়ায় শনিবার থেকে অধিকাংশ পর্যটক কক্সবাজার ত্যাগ করছেন উল্লেখ করে এএসপি মহিউদ্দিন আরও বলেন, ‘পর্যটকরা চলে গেলেও আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। হোটেল-মোটেল ও রেস্টুরেন্টে গিয়ে বুকিং খাতা ও রিসিভ বই থেকে শুরু করে সবকিছু চেক করে দেখবে ট্যুরিস্ট পুলিশ। যাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন: কক্সবাজারে হোটেল-মোটেল জোনে অভিযান, দুটি হোটেলকে জরিমানা

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো. সৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, ‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে পর্যটনের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করছি এবং আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমাদের বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এসব অসাধু ব্যক্তিদের ধরতে মাঠে নেমেছে।’

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের ঢল

মুরাদ ইসলাম আরও বলেন, ‘গত দুই দিন ধরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে হোটেল-মোটেল জোনসহ জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে মনিটরিং চলছে। যেখানে অনিয়ম পাওয়া যাচ্ছে সেখানেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়েছে। শুক্রবার অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ঘটনায় দুটি হোটেলকে ২৫ হাজার জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। হোটেল-মোটেল জোনে পর্যটকরা যাতে হয়রানির শিকার না হন, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

গত বৃহস্পতিবার বাংলা ট্রিবিউনে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল, ডাল-ভাত ৪০০ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। তাতে বলা হয়, পর্যটন শহর কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল ও রেস্টুরেন্টে চলছে গলাকাটা বাণিজ্য। সাধারণ একটি রেস্টুরেন্টে শুধু ডাল-ভাতের দাম রাখা হচ্ছে ৪০০ টাকা। এক প্লেট ভাত ও আলুভর্তার দাম রাখা হচ্ছে ৩০০ টাকা। পাশাপাশি শহরের অটোবাইক ও রিকশাচালকরাও দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছেন। এতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা। এই সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর অভিযানে নামে জেলা প্রশাসন।