মেয়রপ্রার্থীর পক্ষে মাঠে জেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা, তদন্ত কমিটি গঠন

নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে সোমবার (১০ জানুয়ারি) রাতে কালেক্টরেট সহকারী সমিতির নোয়াখালী জেলা কার্যালয়ে সদস্যদের নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী লুৎফুল হায়দার লেলিনের পক্ষে ভোট চেয়ে সভা করেন বরিশাল জেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা। ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটিকে আগামী দুই দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

সভায় উপস্থিত থাকা কালেক্টরেট সহকারী সমিতির একাধিক সদস্য জানান, সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে সংগঠনের নোয়াখালীর সদস্যদের ব্রিফ করেন বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এল এ শাখার উচ্চমান সহকারী ও বরিশাল কালেক্টরেট সহকারী কর্মী সমিতির সভাপতি মাহফুজুর রহমান। এ সময় তার সঙ্গে বরিশাল জেলা প্রশাসকের চতুর্থ শ্রেণির চার সদস্য উপস্থিত ছিলেন। মাহফুজুর রহমান নোয়াখালী পৌরসভার স্বতন্ত্র প্রার্থী লুৎফুল হায়দার লেলিনের পক্ষে ভোট করার জন্য নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের কর্মচারীদের আহ্বান জানিয়ে কীভাবে প্রচারণা চালাতে হবে সে দিকনির্দেশনা দেন।  

সূত্র আরও জানায়, বরিশাল জেলা প্রশাসনের উচ্চমান সহকারীসহ পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধি দল সোমবার দুপুর ২টায় নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী আসেন। তারা ওইদিন সন্ধ্যায় নোয়াখালী কালেক্টরেট সহকারী সমিতির সঙ্গে বৈঠক করে জেলা সার্কিট হাউজে রাত যাপন করেন। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মচারীদের বাসায় বাসায় গিয়ে ভোটের প্রচারণায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। 

বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এল এ শাখার উচ্চমান সহকারী মাহফুজুর রহমান বলেন, মূলত ১৫ তারিখে আমাদের একটা মিটিং আছে। আমাদের সাংগঠনিক বিষয়ে সে বিষয়ে নোয়াখালীতে বসেছিলাম। এখানে যেহেতু নির্বাচন চলে, নির্বাচন হচ্ছে নোয়াখালীতে, আমাদের কথায় কেউ ভোট দেবেনও না আর আমাদের কোনও আত্মীয় স্বজনও নেই। জাস্ট জানতে চাওয়া হয়েছে, তখন এক পর্যায়ে যেটা বলেছি, আপনারা একটু খেয়াল রাখতে পারেন। এখন কেউ কেউ হয়তো বিষয়টি অন্যভাবে নিয়েছেন। 

তদন্ত কমিটির আহবায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজিমুল হায়দার বলেন, আমি ও সদর উপজেলার নির্বাহী কমকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাফিজুল হক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমৃত দেবনাথকে নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। 
 
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, বিষয়টি শুনে এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে একটা তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। দু’দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। যারা যারা জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ।

তবে বরিশালের জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দারের মোবাইলফোনে একাধিকবার কল করেও এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি। 

উল্লেখ্য, নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে মোবাইল প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী লুৎফুল হায়দার লেলিন। তিনি বরিশাল জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দীন হায়দারের ছোট ভাই। আগামী ১৬ জানুয়ারি নোয়াখালী পৌরসভায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান মেয়র সহিদ উল্যাহ্ খান সোহেল। এছাড়া বিএনপি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম কিরন কম্পিউটার (বিএনপি থেকে অব্যাহতি পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী), শহর বিএনপির সভাপতি আবু নাছের নারিকেল গাছ প্রতীকে (বিএনপি থেকে অব্যাহতি পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।