বেলুন বিক্রেতার বানানো সিলিন্ডার বিস্ফোরণেই শঙ্কায় ৩৮ প্রাণ

বেলুন বানিয়ে সেগুলো বিক্রি করেই চলতো কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের মৌকারা ইউনিয়নের বেরুলিয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের পরিবার। তবে হঠাৎ বিস্ফোরণে বেলুনের মতোই চুপসে গেলো সব। বেলুন বানাতে গিয়ে নিজের হাতে তৈরি করা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়েছেন ৩৮ জন। এর মধ্যে ছয় জনই আনোয়ারের পরিবারের সদস্য। বাকিরাও প্রতিবেশী।

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, এক পাশে অর্ধদগ্ধ আনোয়ারের ছয় বছরের মেয়েকে নিয়ে বসে আছেন বোন ফারহানা আক্তার। তিনি জানান, ভাইয়ের পরিবারের ছয় জন এই বিস্ফোরণে ঝলসে গেছে। ছয় জনের চার জনই শিশু। তারা হলেন- আনোয়ারের বোন নাছরিন (২৮), বড় মেয়ে আফনান (৮), ছোট মেয়ে মরিয়ম (৬), তার বোনের ছেলে নাজমুল (৭) ও বোনের মেয়ে নুসরাত (৩)।

ফারহানা জানান, তার ভাই আনোয়ার রাজ মিস্ত্রির কাজ করলেও মেলার মৌসুমে বেলুন বানিয়ে পাইকারদের কাছে বিক্রি করতেন। বৃহস্পতিবার বেলুনের একটি বড় অর্ডার আসে। সেই সঙ্গে সামনের শনিবার বেরুলিয়া গ্রামে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ঠান্ডাকালি মেলা। ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ওই মেলায় বিক্রি হয় হাজার হাজার বেলুন। ফলে বেলুন ফুলিয়ে বিক্রির জন্য জমা করছিল।

হাসপাতালে আহতদের স্বজনরা

এদিকে নিজের দুই মেয়ে ও স্বামীর ঝলসে যাওয়া শরীর দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন আনোয়ারের স্ত্রী। বিকাল থেকে বাকরুদ্ধ আনোয়ারের স্ত্রী ঘরেই পড়ে আছে বলে জানান বোন ফারহানা। 

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আসিফ ইমরান জানান, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি আছেন ২২ জন। তাদের কেউই শঙ্কামুক্ত নন। তবে আনোয়ার ও তার ছয় বছরের মেয়ে মরিয়মের অবস্থা বেশি আশঙ্কাজনক।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার বিরুলিয়া গ্রামের বেলুন ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বেলুন ফোলানোর সময় বাড়ির মানুষজন ভিড় জমান। হঠাৎ সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। যাদের ৩৮ জনের অবস্থা গুরুতর।