একটি সেতুর অভাবে পাঁচ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি

খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার দুর্গম গ্রাম হলুদিয়াপাড়া, ডান্ডিপাড়া, বড়পাড়া, সমুরপাড়া ও লেলাং। গ্রামগুলোর মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে ধুরং নদী। এই নদীতে সেতু না থাকায় ভোগান্তিতে আছেন পাঁচ গ্রামের কয়েকশ’ পরিবার।

শিশুরা দন্ডিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করলেও এলাকায় নেই কোনও মাধ্যমিক স্কুল বা কলেজ। ফলে নদী পার হয়ে লক্ষ্মীছড়ি বা মানিকছড়ি উপজেলায় গিয়ে পড়তে হয়।

এছাড়া কৃষকদের উৎপাদিত ফসল সময় মতো বাজারে আনা-নেওয়া করা যায় না। শীতকালে কোনোভাবে ট্রাক্টর, জিপ বা মোটরসাইকেলে নদীর পার হওয়া গেলেও, বর্ষাকালে যোগাযোগ একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে শিক্ষার্থী ও অসুস্থ ব্যক্তিসহ এলাকাবাসীকে সমস্যায় পড়তে হয়।

অন্যান্য সময়ে হেঁটে নদী পার হওয়া গেলেও বর্ষা মৌসুমে ভোগান্তি বাড়ে

হলুদিয়াপাড়া এলাকার লাব্রেচাই মারমা জানান, একটি সেতুর অভাবে তাদের ভোগান্তি চরমে। বর্ষাকালে এই পাঁচ গ্রামের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না। কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সময় মতো বিক্রি করতে পারে না। যাতায়াত খরচও বেশি পড়ে।

লেলাং গ্রামের বাসিন্দা মিতা চাকমা বলেন, কোনও লোক অসুস্থ হলে তাকে লক্ষ্মীছড়ি, মানিকছড়ি ও খাগড়াছড়ির হাসপাতালে নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। গর্ভবতী নারীদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। বর্ষাকালে নৌকায় পারাপার হতে হয়। পানি বাড়লে তীব্র স্রোতে নৌকা চলে না। বেশ কয়েকবার নৌকাডুবির ঘটনাও ঘটেছে।

উৎপাদিত পণ্য যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে বাজারজাত করা যায় না

সমুরপাড়া গ্রামে আবদুল হক বলেন, নদীর এপারে প্রায় দেড় হাজার লোকের বসবাস। সবাই বন, পাহাড় আর কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু উৎপাদিত পণ্য যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে বাজারজাত করা যায় না। বর্ষাকালে খাবার জোগাড় করাই কষ্টকর হয়ে পড়ে।

দন্ডিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঠিকাদার মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, রড, সিমেন্ট, বালুসহ অন্যান্য মালামাল নদীর ওপারে নিতে খরচ বেশি পড়েছে, সময়ও বেশি লেগেছে। সময়মতো কাজ শুরু ও শেষ করা যায়নি। এলাকা উন্নয়নে ধুরং নদীতে একটি সেতু দরকার।

উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান বলেন, ধুরং নদীর ওপর ১২০ মিটার দীর্ঘ সেতু করার পরিকল্পনা আছে। ডিপিপিতে এটা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরে হয়তো সেতু নির্মাণকাজে হাত দেওয়া যাবে।