X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

রমজানে নেই কাজ, নিত্যপণ্যের বাজারে দিনমজুরদের কপালে চিন্তার ভাঁজ

তানভীর আহমেদ, সুনামগঞ্জ
২১ মার্চ ২০২৪, ১০:০২আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৪, ১০:১২

ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল সাতটা। সূর্যের আলো সেভাবে ফোটেনি। কিন্তু তাতে কী! ঝড় কিংবা বৃষ্টি যা-ই থাকুক তা মাথায় নিয়ে শ্রম বিক্রি করতে প্রতিদিন ভোরে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের কালীবাড়ি পয়েন্টে হাজির হন শ্রমজীবী মানুষেরা। এই সময় বিকিকিনি চলে মানুষের শ্রম।

শ্রমজীবী মানুষেরা শহরের আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই বসে থাকেন শ্রম বিক্রির আশায়। ভাগ্য ভালো থাকলে কোনও ক্রেতা এসে দরদাম করে কিনে নিয়ে যান। পবিত্র রমজান মাস চলমান থাকায় অনেকসময় ক্রেতা না পেয়ে খালি হাতেই ফিরে যেতে হয় ঘরে। বিভিন্ন বয়সী শুধু পুরুষ নন, নারীরাও ঠিক এভাবে নিজেদের শ্রম বিক্রি করতে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন এই পয়েন্টে।

বুধবার (২০ মার্চ) সকালে সরেজমিনে গেখা গেছে, মাত্র ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে আস্ত একজন ‘জলজ্যান্ত মানুষ’। পছন্দমতো বেছে নেওয়া যাবে নারী কিংবা পুরুষ। আধুনিক যুগে এমন কথা অবাস্তব মনে হলেও সুনামগঞ্জের কালীবাড়ি পয়েন্ট এলাকায় প্রতিনিয়ত সরাসরি মানুষ নন, বিক্রি হয় মূলত তাদের শ্রম। ক্রেতারা এসে দর-কষাকষি করে এসব মানুষকে কাজ করানোর জন্য নিয়ে যান কর্মক্ষেত্রে।

হাটে ক্রেতার আশায় দাঁড়িয়ে থাকা অঞ্জন দাস বলেন, ‘সকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এইখানে আসি। কোনও দিন কাজ মেলে, কোনও দিন মেলে না। তা ছাড়া এখন রমজান মাস চলছে। কাজের পরিমাণ অনেক কম। কোনও দিন ৩৫০ টাকায় আবার কোনও দিন ৪০০ টাকায় সারা দিন কাজ করতে হয়। এই টাকায় কি সংসার চলে? পরিবারে ৫ জন মানুষ আছে। দিন দিন এদের ভরণপোষণ করা কষ্টকর হচ্ছে।’

অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, ‘বাজারে সব জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। আমাদের মতো দিনমজুরদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে জিনিসপত্রের দাম। অনেকসময় পানি দিয়া ভাত খাওয়া লাগে, মাছ-মাংস কিনে খাওয়া আমাগোর জন্য বিলাসিতা। গরিবের কষ্টের খোঁজ কেউ রাখে না।’

সকাল থেকে কাজের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা রোজিনা বেগম বলেন, ‘অভাবের সংসার, কাজ না করলে খাওন পাইতাম কই থাকি? তাই আমরা প্রতিদিনই কাজ করি। মূলত বাধ্য হয়েই কাজ করতে হয়। না করলে পেট চলবে কী করে? ভীষণ কষ্ট হয়! তারপর আবার নারীদের দাম নাই। পুরুষের থেকে ১০০-১৫০ টাকা কমে কাজ করা লাগে। আবার অনেকসময় কাজ না পাইলে খালি হাতেই বাড়ি ফিরতে হয়।’

দীর্ঘদিন যাবৎ এই পেশায় জড়িত রয়েছেন আব্দুস শহীদ মিয়া। পরিবারে ২ ছেলে এক মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছেন। তিনি তার কাজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, ‘ফজরের আজান দেওয়ার সাথে সাথে ঘুম ভেঙে যায়। তারপর হাতমুখ ধুয়ে আস্তে আস্তে ওয়েজখালি থেকে হেঁটে হেঁটে এইখানে আসি। কাজ করার জন্য নিয়মিত আসতে হয়। অনেকসময় দেখা যায় মানুষ বেশি হই গেলে দাম কমি যায়। মাঝে মাঝে ২৫০-৩০০ টাকায়ও কাজে যেতে হয়। আবার অনেকসময় কাজ মেলে না। আবার দেখা যায় এক কাজের কথা বলে নিয়ে গিয়ে অন্য কাজ করায়। খুব কষ্টে আছি আমরা।’

/কেএইচটি/
সম্পর্কিত
সবজির বাজার ঊর্ধ্বমুখী, তীব্র গরমকে দুষছেন বিক্রেতারা
দক্ষিণখানে ভবনের চার তলা থেকে পড়ে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু
যুক্তরাষ্ট্র বড় শক্তি, তাদের পরোয়া করতে হয়: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
সর্বশেষ খবর
সিলেটে ট্রাকের ধাক্কায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
সিলেটে ট্রাকের ধাক্কায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
আবারও জীবিত দুই জিম্মির ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস
আবারও জীবিত দুই জিম্মির ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
টিভিতে আজকের খেলা (২৮ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২৮ এপ্রিল, ২০২৪)
সর্বাধিক পঠিত
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই