বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত ১৫

দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার রিজেন্ট টেক্সটাইল কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় বিক্ষোভে বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। এতে পুলিশ ও শ্রমিকসহ ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সোমবার (৪ এপ্রিল) সকালে উপজেলার কালুরঘাট এলাকায় রিজেন্ট টেক্সটাইল কারখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে কালুরঘাট-বোয়ালখালী সড়কে বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ ছিল।

শ্রমিকদের অভিযোগ, দুই মাসের বেতন বকেয়া রেখে গত ১৬ মার্চ কারখানার কাজ বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ। পরে শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৩ এপ্রিল কারখানা খোলার কথা জানানো হয়। ওই দিন বেতন দেওয়া হবে বলা হয়েছিল। কিন্তু কারখানায় আসার পর মালিকপক্ষ জানায় সোমবার বেতন দেওয়া হবে। সে অনুযায়ী সোমবার কারখানায় আসেন শ্রমিকরা। কিন্তু শ্রমিকদের কারখানার ভেতরে ঢুকতে দেননি দারোয়ানরা। এ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা।

রিজেন্ট টেক্সটাইল কারখানার শ্রমিক নুর মোহাম্মদ, আব্দুল কাদের ও মো. মারুফ জানিয়েছেন, দুই মাস ধরে বেতন দিচ্ছে না রিজেন্ট টেক্সটাইল। শ্রমিকরা বারবার বলার পরও প্রতিষ্ঠান থেকে বারবার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছিল। বাধ্য হয়ে বকেয়া বেতনের দাবিতে সোমবার বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। কারখানার সামনে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছিলেন তারা। কিন্তু মালিকপক্ষের ইন্ধনে বিক্ষোভে বাধা দেয় পুলিশ। তখন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জ ও শ্রমিকদের ছোড়া ইট-পাটকেলে ১৫ জন আহত হন।

বোয়ালখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল থেকে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার সামনে বিক্ষোভ করছিলেন শ্রমিকরা। একপর্যায়ে তারা কারখানার সামনের সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচলে বাধা দেন। শ্রমিকদের সড়ক থেকে উঠে যাওয়ার অনুরোধ করলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় সংঘর্ষে কয়েকজন শ্রমিক ও পুলিশ আহত হন। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।’

বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী মেডিক্যাল কর্মকর্তা সঞ্জয় সেন বলেন, ‘আহত অবস্থায় ছয় পুলিশ ও ছয় শ্রমিকসহ ১২ জন চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। ইটের আঘাতে তারা আহত হয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর চলে গেছেন তারা।’

বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম বলেন, ‌‘রিজেন্ট টেক্সটাইল কারখানার মালিক সালমান কাদিরের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, আগামী ১২ এপ্রিলের মধ্যে শ্রমিকদের সব ধরনের পাওনা পরিশোধ করবেন। আমরা বিষয়টি শ্রমিকদের জানিয়েছি। তারা আশ্বাস মেনে নিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিজেন্ট টেক্সটাইল কারখানার মালিক সালমান কাদির বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেওয়া হবে।’