বৈসু উৎসবে মুখর লালমাই পাহাড়

বৈসু উৎসবে মুখর হয়ে উঠেছে কুমিল্লার লালমাই পাহাড়। ত্রিপুরা পল্লীর নারীা সেজেছেন ঐতিহ্যবাহী পোশাকে। তাদের ঘরে ঘরে এখন জমজমাট উৎসব। চৈত্রের শেষ দিন বুধবার (১৩ এপ্রিল) সকালে আনন্দ র‍্যালি ও নদীতে ফুল ভাসান তারা।
 
প্রতি বছর চৈত্রের শেষ দিনে বর্ষবরণের এই উৎসবে মেতে ওঠেন ত্রিপুরা পল্লীর বাসিন্দারা। উৎসবমুখর হয়ে ওঠে লালমাই পাহাড়। সম্প্রীতির মিলনমেলায় মিশে যায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বাঙালিরা।

লালমাই পাহাড়ের ত্রিপুরা পল্লীতে দেখা যায়, ঘরে ঘরে রান্না পাঁচন (হরেক রকম সবজির সংমিশ্রণ) ও লুচি মিষ্টান্নসহ নানান রকমের খাবারের আয়োজন চলছে। 

সকাল ১০টার দিকে ত্রিপুরা পল্লী থেকে তরুণ-তরুণীরা দল বেঁধে র‍্যালি নিয়ে আসেন কুমিল্লার কোটবাড়ির বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমির (বার্ড) পুকুরে। সেখানে তারা ফুল ভাসিয়ে উলুধ্বনি দিয়ে সম্পন্ন করেন গঙ্গা পূজা। এ সময় তাদের র‍্যালিতে যুক্ত হন সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশিষ ঘোষ ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু। 

ফুল ভাসিয়ে উলুধ্বনি দিয়ে গঙ্গা পূজা করেন ত্রিপুরারা

শুভাশিষ ঘোষ বলেন, ত্রিপুরা পল্লীতে এসে খুবই ভালো লাগছে। বাংলা বর্ষবরণ আমাদের সংস্কৃতির অংশ। পাহাড়িদের এসব অনুষ্ঠান আমাদের সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রেখেছে। তাদের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে এটি অন্যতম। আমি তাদের আশ্বাস দিয়েছি তাদের যেমন সাহায্য দরকার উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদের পাশে থাকবো।

সালমানপুর ত্রিপুরা উপজাতি কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি সজীব চন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, আমরা প্রত্যেক বছর চৈত্রের শেষ দিনে এই উৎসব করি। এবারও করছি। গঙ্গা পূজার পরে আমাদের পল্লীতে বৃদ্ধস্নান অনুষ্ঠানের আয়োজন করি, তারপর আয়োজন করি অতিথি আপ্যায়নের। এরপর সারাদিন চলে আমাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিকালে ঘরে ঘরে সবাই নারায়ণ পূজা করে। 

এদিকে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে বৈসাবি উৎসবের রঙ ছড়িয়ে পড়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কাছে এই উৎসব ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। চাকমারা বিজু, ত্রিপুরারা বৈসু বা বৈসুক, মারমারা সাংগ্রাই, তঞ্চঙ্গ্যারা বিষু, ম্রো ও খুমিরা চাংক্রান, অহমিয়ারা বিহু ও চাক নামে উৎসবটি উদযাপন করে থাকে। এই উৎসব বৈসাবি নামেও পরিচিত।