ঈদযাত্রায় ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত পুলিশ চায় বিআইডব্লিউটিএ 

ঈদুল ফিতরে লঞ্চ যাত্রীদের নিরাপদ যাতয়াত নিশ্চিত করতে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা-চাঁদপুরসহ বিভিন্ন রুটে এখনও যাত্রীদের চাপ না বাড়লেও বৃহস্পতিবার থেকেই ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ বাড়ার ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

এ অবস্থায় ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে স্পেশাল লঞ্চ সার্ভিসের ব্যবস্থা, ট্রলার বা নৌকাযোগে লঞ্চে যাত্রী আরোহণ বন্ধ, নৌযানগুলোতে পর্যাপ্ত জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জমাদি নিশ্চিত করা, নেভিগেশন উপকরণসমূহের সঠিকতা এবং সনদধারী মাস্টার ও ইঞ্জিন ড্রাইভার দিয়ে লঞ্চ পরিচালনা করা, নদীতে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ, লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স মোতায়েন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের কথা বলছে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ।

বিআইডব্লিউটিএ জানায়, ঈদ এবং অন্যান্য ধর্মীয় উৎসবে চাঁদপুর নদী বন্দর ও লক্ষ্মীপুর জেলার মজু চৌধুরীহাট নদী বন্দর হতে বিভিন্ন নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হয়। ঈদ মৌসুমে টার্মিনাল ত্যাগ করার পরও অনির্ধারিত ঘাট/পয়েন্ট হতে লঞ্চে যাত্রী বহন করা হয়। তাই অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন রোধ হচ্ছে না।

এছাড়া দেশের কোনও কোনও স্থানে বন্যা পরিস্থিতি বিরাজমান থাকায় নদীগুলোতে স্রোতের তীব্রতা দেখা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ রোধ করা না গেলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। 

চাঁদপুর নদী বন্দরের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক এ.কে.এম. কায়সারুল ইসলাম বলেন, চাঁদপুর থেকে ঢাকা, বরিশাল, শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন রুটের মানুষ লঞ্চযোগে যাতায়াত করে। আর মজু চৌধুরীহাট নদী বন্দর হয়ে ভোলা, ইলিশা, বরিশালসহ কয়েকটি রুটে লঞ্চে যাত্রী পরিবহন করা হয়। ঈদে এসব রুটে যাত্রী যাতয়াত নিরাপদ করতেই আমরা বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে সার্ভে সনদ অনুযায়ী নৌযানগুলোতে পর্যাপ্ত জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জমাদি, নেভিগেশন উপকরণসমূহের সঠিকতা এবং সনদধারী মাস্টার ও ইঞ্জিন ড্রাইভার নিয়োজিত আছে কিনা তা যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনরোধ করতে তাৎক্ষণিক কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ, টার্মিনাল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ২৬ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স চাওয়া হয়েছে।

উপপরিচালক এ.কে.এম. কায়সারুল বলেন, ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে ঈদে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের চাপ এখনও বাড়েনি। যাত্রীদের চাপ স্বাভাবিক সময়ের মতো রয়েছে। যাত্রীদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে বিশেষ লঞ্চ চলবে। এছাড়া ২৮ এপ্রিল থেকে লঞ্চ টার্মিনালে আনসার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন।

এদিকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পুলিশের পক্ষ থেকে পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে সভা করা হয়েছে। সভায় পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ বলেন, কোনও অবস্থাতেই লঞ্চ, ট্রেন ও বাসে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না। আগামী ৫ মে পর্যন্ত কোনও অবস্থাতেই নদীতে বাল্কহেড চলতে পারবে না। এছাড়া ঈদকে সামনে রেখে শপিংমল, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেলস্টেশন, ঈদ জামাত এবং বিনোদন কেন্দ্র কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ঈদ উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা করেছি। সেখানে সার্বিক দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এবার ফিটনেসবিহীন কোনও লঞ্চ চলাচল করতে পারবে না। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত কোনও যাত্রী লঞ্চে বহন করা যাবে না। বিআইডব্লিউটিএ এসব বিষয় চেক করে দেখবে। এছাড়া লঞ্চঘাটে ভ্রাম্যমাণ আদালতও থাকবে।