৬ দিনেও খোঁজ মেলেনি চার বোনের

মা-বাবার সঙ্গে রাগারাগি করে বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার হুমকি দেয় কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের চার বোন। পরে রাগ ভাঙাতে এসে নাতনিদের সঙ্গে করে নিয়ে যান তাদের নানু। পর দিন বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সেই বাড়ি থেকে মাদ্রাসার উদ্দেশে বের হয় তারা। সেদিন থেকে নিখোঁজ তারা। নিখোঁজ চার বোন উপজেলার মৌকরা ইউনিয়নের কালেম গ্রামের মজিবুল হকের মেয়ে। তারা স্থানীয় দুইটি মাদরাসার শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে তারা নিখোঁজ। আত্মীয়-স্বজনসহ বন্ধু-বান্ধবীদের বাড়িতে খোঁজ করেও মেলেনি সন্ধান। শুক্রবার (২৭ মে) রাতে নাঙ্গলকোট থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তাদের বাবা মুজিবুল হক। কিন্তু নিখোঁজের ছয় দিনেও তাদের হদিস মেলেনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তাদের বাবা মজিবুল হক দীর্ঘদিন দাফন সেবা ও লাশ গোসল দিয়ে আসছেন। নিখোঁজ চার বোনের মধ্যে তাসনিম জাহান (১৭), মারজাহান (১৪), তাজিন সুলতানা (১২) যথাক্রমে নাঙ্গলকোট আফসারুল উলুম কামিল মাদরাসার আলিম প্রথম বর্ষ, অষ্টম ও ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ও মাইশা সুলতানা (৬) নারুয়া তা’লিমুল কোরআন মডেল মাদরাসার শিশু শ্রেণির ছাত্রী।

তাদেরকে গত বুধবার (২৫ মে) একই ইউনিয়নের নারুয়া গ্রামের নানার বাড়িতে নিয়ে যান তাদের নানু। বৃহস্পতিবার সকালে নাশতা করে ৯টার দিকে তারা চার বোন নানার বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা বলে বের হয়। এরপর থেকে তারা বাড়ি ফেরেনি। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

তাদের বাবা বলেন, ‘বুধবার সামান্য বকাঝকা করেছি তাদের। এরপর তাদের নানু এসে নিয়ে গেছে। নানুর বাড়িতে যাওয়ার পর তারা স্বাভাবিক হয়ে যায়। পরদিন সকালে তারা মাদ্রাসার উদ্দেশে বের হয়। খবর নিয়েছি, তারা সেদিন মাদ্রাসায় ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি কোরআন শরিফ নিয়া বইসা আছি। আল্লাহর কাছে আমার কলিজাগুলোরে চাই। আমার ছোট মাইয়াডা কেমন আছে? সে আমারে ছাড়া খাবার খায় না। আমার সব আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খোঁজ নিয়েছি, থানায় গেছি। কোথাও তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।’

মৌকরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘একসঙ্গে চার জন মেয়ে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এই বিষয়ে প্রশাসনের তেমন তৎপরতা দেখছি না। প্রশাসন নজর দিলে দ্রুত তাদের খুঁজে বের করা সম্ভব। আমার তো ভয় লাগছে, তারা অন্য কোনও বিপদে পড়েছে কি-না।’

নাঙ্গলকোট থানার ওসি ফারুক হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর থেকেই মাঠে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে পুলিশ। ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। চার জন মেয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি আসলে দুঃখজনক।’