সীতাকুণ্ডে আগুন

চমেকে এখনও চিকিৎসাধীন ৫৪ জন, অধিকাংশের চোখে সমস্যা

সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে আহতদের মধ্যে ৫৪ জন এখনও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের অধিকাংশের চোখে সমস্যা বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

অগ্নিকাণ্ডে আহতদের একজন নগরীর দক্ষিণ হালিশহর এলাকার মো. রাজু (৩৬)। দুর্ঘটনার পর তিনি ভালো দেখতে পাচ্ছেন না। দুই পা’সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এখনও ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। 

হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বি-২১ নম্বর সিটে চিকিৎসাধীন রাজু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি বিএম কনটেইনার ডিপোর ট্রান্সপোর্ট সুপারভাইজার। ৪ জুন আগুন লাগার পর লোকজনকে সরানোর কাজ করছিলাম। হঠাৎ বিস্ফোরণে আহত হয়েছি। কীভাবে কী হয়ে গেলো কিছুই বুঝতে পারলাম না। জ্ঞান ফিরে দেখি, আমি হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছি। এরপর থেকে চোখে ভালো দেখতে পারছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বৃদ্ধ মা-বাবা আছেন। পুরো পরিবার আমার উপার্জনে চলে। কবে পুরোপুরি সুস্থ হবো, বুঝতে পারছি না।’

শনিবার (১১ জুন) সকালে চমেক হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে দেখা গেছে, অগ্নিকাণ্ডে আহত ২৩ জন এখনও এই ওয়ার্ডের বিভিন্ন বেডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে ১ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন নুর মোহাম্মদ (১৯)। তিনি ভোলার লালমোহন উপজেলার কুমারখারী এলাকার মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের ছেলে। 

নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর থেকে চোখে ভালোভাবে দেখতে পারছি না। হাত-পা’সহ বিভিন্ন স্থানে স্থানে এখনও ব্যান্ডেজ। এভাবে আর কতদিন থাকতে হবে জানি না।' 

২৮ নম্বর সিটে ওমর ফারুক, ৫ নম্বর সিটের রজ্জক মন্ডল ও ২১ নম্বর সিটে জাহাঙ্গীর আলম চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রত্যেকের অন্যান্য সমস্যার পাশাপাশি আছে চোখের সমস্যা দেখা দিয়েছে।

চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আহতদের মধ্যে ৫৪ জন চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ২৩, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৯, ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ৮, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ১, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে দুই জন।

এছাড়া সিএমএইচে ১৫ জন, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ২০ জন, পার্ক ভিউ হাসপাতালে ১৫ জন, মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ১ জন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১ জন, জেনারেল হাসপাতালে ১ জন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ৪ জন, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ১ জন ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে ১ জন চিকিৎসাধীন আছেন।

চমেক হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের প্রধান প্রফেসর তনুজা তাজনীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে আহতদের মধ্যে যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে, তাদের অধিকাংশরেই চোখে সমস্যা। কয়েকজনের অবস্থা এখনও গুরুতর। কয়েকজনের চোখ ঘোলাটে হয়ে যেতে পারে। তবে অন্যদের অবস্থা দিন দিন উন্নতির দিকে।’