দীর্ঘ ৬৫ দিন মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞার সুফল পাচ্ছেন জেলেরা। সমুদ্র থেকে ট্রলারভর্তি ইলিশ নিয়ে উপকূলে ফিরতে শুরু করেছেন তারা। গত দুই দিন ধরে যে সব জেলে কক্সবাজার উপকূলে ফিরেছেন তাদের প্রত্যেকেই ট্রলার ভর্তি মাছ নিয়ে এসেছেন। ইলিশের পাশাপাশি জেলেদের জালে ধরা পড়ছে সুরমা, লাল পোয়া, রূপচাঁদাসহ নানা প্রজাতির মাছ।
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ম্যানেজার আহসানুল হক বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার পর কক্সবাজারের সব জেলে সাগরে মাছ ধরতে গেছেন। জেলেরা মাছ ধরা শেষে কূলে ফিরে এলে বোঝা যাবে কি পরিমাণ মাছ ধরা হয়েছে। তবে প্রথম দিনে ১৬ মেট্রিক টন মাছ কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে বিক্রি হয়েছে। চলতি বছর ৯ হাজার মেট্রিক টন মাছ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ জুলাই) কক্সবাজার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ‘সাগরে মাছ ধরে কিছু কিছু জেলে উপকূলে ফিরে আসছেন। তাদের ট্রলারের প্রতিটিতে ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছের স্তুপ। যারা সপ্তাহ বা ১০ দিনেরও বেশি সময়ের জন্য মাছ ধরতে গেছেন, তাদের মাছ বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এফবি শাহরিয়া নামের ফিশিং ট্রলারের মাঝি হুময়ায়ূন কাদের বলেন, সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় আশা করেছিলাম বেশি মাছ পাবো, তাই হয়েছে। গত রাতে সাগরে গেলাম। জাল তুলে দেখি ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। দেখে অনেক খুশি হলাম। পরিবারের টাকা পাঠাতে পারবো, তাই আরও বেশি খুশি লাগছে।
ফিশারি ঘাটের ব্যবসায়ী সৈয়দ হোসাইন বলেন, ইলিশের সাইজ অনুযায়ী বিভিন্ন দামে আমরা মাছ কিনছি। তবে ছোট সাইজের মাছ নেই। বড় সাইজের মাছ দেখা যাচ্ছে। এগুলো কেজিতে ১১০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত ক্রয় করছি। মণ হিসেবে ৪০ হাজার থেকে ৪৫ হাজার। আর গণনা করে নিলে ১০০ ইলিশের দাম ১৬ হাজার থেকে ১৭ হাজার টাকায় কিনছি আমরা। বেশি মাছ পাওয়া গেলে দাম একটু কমবে।
তিনি আরও বলেন, সাগরে মাছ ধরায় সরকার ঘোষিত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞার করণে সাগরে মাছের ঘনত্ব বেড়ে যায়। ফলে অনেকদিন পর সাগরে জাল ফেলে বেশি মাছ পাওয়া যায়। আশা রাখি সামনের দিনগুলোতে বেশি পরিমাণে মাছ পাবেন জেলেরা।
দীর্ঘ দুই মাসের বেশি সময় ধরে সাগরে মাছ ধরার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে উঠায় কক্সবাজার জেলেপাড়া সরগরম হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় জেলে পরিবারে দেখা দিয়েছে হাসির ঝিলিক।