৩ ভাইয়ের ফাঁসির আদেশ, বাবার যাবজ্জীবন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার চাঁনপুর উত্তরপাড়া গ্রামে বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে চাঞ্চল্যকর শরিফ খাঁ (৫০) হত্যা মামলার রায়ে তিন ভাইকে মৃত্যুদণ্ড এবং তাদের বাবাকে যাবজ্জজীন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া দায়রা জজ আদালতের বিচারক শারমিন নিগার এই রায় দেন। মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো মো. জাকির খাঁ (৪০), মাহবুব খাঁ (৩০) ও গাজী খাঁ (২৪)। মামলায় তাদের বাবা আমানত খাঁকে (৬৫) যাবজ্জজীন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

এছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। অন্যদিকে যাবজ্জজীন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আমানত খাঁর ক্ষেত্রে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট সকাল ৮টার দিকে বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে চাঁনপুর উত্তরপাড়া গ্রামে শরিফ খাঁকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে আসামিরা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে আখাউড়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে নরসিংদীতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আরও পাঁচ জন আহত হন।

ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী মাজেদা বেগম বাদী হয়ে ওইদিন রাত সোয়া ৮টার দিকে মো. জাকির খাঁ, মাহবুব খাঁ, গাজী খাঁ ও তাদের বাবা আমানত খাঁ এবং আমির খাঁকে আসামি করে আখাউড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে আখাউড়া থানার উপ-পরিদর্শক মো. আকরামুল হক ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া দায়রা জজ আদালতের বিচারক শারমিন নিগার আজ রায় ঘোষণা করেন। 

ঘটনার পর থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা সবাই বিদেশে পলাতক রয়েছেন। মামলায় তাদের বাবা আমানত খাঁ জেল হাজতে রয়েছেন। অপর আসামি আমির খাঁ ২০১৮ সালের ২৪ মে মাদক কারবারি হিসেবে অপর একটি ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হন।

মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে মামলার বাদী মাজেদা বেগম ও সন্তান রাসেল খাঁ জানান, রায় বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা খুশি হতে পারছেন না। তারা আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকরের জোর দাবি জানান।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আজাদ রকিব (তুরান) বলেন, রায়ের মধ্যদিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। 

তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. শাহপরান চৌধুরী দাবি করেন, রায়ে আমার মক্কেলরা ন্যায়বিচার পাননি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানান তিনি।