রাতে আর বাড়ি ফেরা হলো না মেহেদীর 

সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে চেয়েছিলেন মো. মেহেদী হাসান (২২)। প্রতিদিনের মতো বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতেও গাড়ি গ্যারেজে রেখে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। এসময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রায়পুর এলাকায় বাস দুর্ঘটনা দেখতে রওনা হন তিনি। তখনই নিজ বাড়ির প্রায় দুইশ’ গজ দূরে বেপরোয়া গতির একটি কাভার্ডভ্যান তাকে চাপা দেয়।

মেহেদীর বড়ভাই পেশায় লরিচালক ও ছোটভাই সিএনজি-অটোরিকশার মেকানিক। আর স্থানীয় একটি এনজিও থেকে কিস্তিতে টাকা নিয়ে সিএনজি-অটোরিকশা কিনেছিলেন মেহেদী। এখনও তার পুরো টাকা শোধ করা হয়নি। নিজস্ব কোনও ভিটে না থাকায় উপজেলার রায়পুর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সওজের খাস জায়গায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন তিনি।

দুর্ঘটনায় নিহত মেহেদীর স্বজনদের আহাজারিমেহেদীর মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সে দুপুরে বাড়ি থেকে ভাত খেয়ে বের হয়েছে। প্রতিদিন রাত ১০টায় বাড়ি চলে আসে। কিন্তু ছেলে আজ লাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। কিস্তির উপর টাকা নিয়ে সে সিএনজি-অটোরিকশা কিনেছিল। কিন্তু টাকা শোধ করার আগেই সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছে।

মেহেদীর বাবা হারুন অর রশিদ বলেন, আমাদের নিজস্ব কোনও সম্পত্তি নেই। মহাসড়কের পাশে খাস জায়গায় ছোট্ট ঝুপড়ি ঘরে ছেলে সন্তান নিয়ে বসবাস করি। আশা ছিলো ছেলেদের ইনকামের টাকায় জায়গা কিনে নতুন বাড়ি করবো। মেহেদীও স্বপ্ন দেখতো নিজেরা জমি কিনে ঘর তৈরি করবে। কিন্তু আমাদের সেই স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে গেলো।