ইন্টার্ন চিকিৎসককে যৌন নির্যাতন, নিরাপত্তা প্রহরী গ্রেফতার

নোয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রহরী এ ঘটনা ঘটিয়েছে। রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টায় হাসপাতাল ক্যাম্পাসের জরুরি বিভাগ সংলগ্ন পাবলিক টয়লেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিক ইন্টার্ন চিকিৎসকরা একত্রিত হয়ে ওই নিরাপত্তা প্রহরীকে দফায় দফায় মারধর করেন, পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় ওই ইন্টার্ন চিকিৎসক সুধারাম মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। রবিবার রাতে পুলিশ তাকে জেনারেল হাসপাতাল থেকে আটক করে সুধারাম থানায় নিয়ে আসে। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোহয়। এই ঘটনার পর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন। 

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

ইন্টার্ন নারী চিকিৎসক জানান, রবিবার তিনি হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে ডিউটি শেষে শহরের বাসায় ফেরার পথে জরুরি বিভাগ সংলগ্ন পাবলিক টয়লেটের সামনে রোহিঙ্গা ওয়ার্ডে কর্তব্যরত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিরাপত্তা প্রহরী আশরাফ উদ্দিনের (৫০) মুখোমুখি হই। এ সময় আশরাফ উদ্দিন শারীরিকভাবে আমাকে হেনস্তা করে।  

খবর পেয়ে, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ঘটনাস্থল এসে ওই নিরাপত্তা প্রহরীকে মারধর করলে, সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে বিকালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. অনিক বিশ্বাস বলেন, হাসপাতালে প্রকাশ্যে একজন নারী চিকিৎসককে যৌন নির্যাতনের বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এতে বোঝা যায় হাসপাতালে নারী চিকিৎসকরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দায়িত্ব পালন করছেন। ডিউটি ডাক্তারের রুম থেকে রাতের বেলায় অন্যান্য ওয়ার্ডে যেতে বাতি থাকে না। এ সময় বহিরাগত বখাটেরা হাসপাতালের বিভিন্ন সড়কে মাদক সেবন করে এবং নারী চিকিৎসকদের উত্ত্যক্ত করে। তাই নারী চিকিৎসকদের নিরাপত্তা, ডিউটি ডাক্তারের কক্ষে টয়লেট ও পর্যাপ্ত ফার্নিচারের ব্যবস্থা করা এবং তাদের  ইন্টার্নশিপ ভাতা প্রতি মাসের ৫ তারিখের মধ্যে পরিশোধের দাবি জানান তিনি।  

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ওই ঘটনার পর হেনস্তাকারী নিরাপত্তা প্রহরীকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, নারী চিকিৎসককে হেনস্তার ঘটনায় তাৎক্ষণিক ওই নিরাপত্তা প্রহরীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এই ঘটনায় নোয়াখালী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাইমা নুসরাত জেবিনকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সুধারাম মডেল থানার ওসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, নারী চিকিৎসকের অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।