মিয়ানমারের গোলাগুলির শব্দে ঘুম ভাঙলো সীমান্তের বাসিন্দাদের

বান্দরবা‌নের নাইক্ষ‌্যংছ‌ড়ির ঘুমধু‌ম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি সীমা‌ন্তের ৩৯ পিলারের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরে গোলাগুলি হচ্ছে। আর এই গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে বাইশফাঁড়ি সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দাদের কানে।

বাসিন্দারা দাবি করেন, শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে পর পর ১৫টি মর্টারশেলের শব্দ পাওয়া গেছে। বিকট শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা।

৩৯ পিলারের নিকটবর্তী স্থানে বসবাসরত বাংলাদেশি হাফেজ আহমদ, আবদুর রহিম ও জুহুরা বেগম জানান, প্রতিদিনই ভয়ে ভয়ে তারা রাত কাটান। বর্তমানে রাত ১টার পর ঘুম আসে তাদের। এর আগে এলাকার কেউ ঘুমান না। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রা‌তেও তারা ১টার পর ঘুমিয়েছেন। কিন্তু গোলাগুলির শব্দ না পেলেও শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দি‌কে হঠাৎ বিকট গোলার শব্দে তাদের ঘুম ভাঙে। এ সময় পর পর ১৫-২০টি মর্টারশেলের আওয়াজে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তারা।

নাইক্ষ‌্যংছ‌ড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস বলেন, আজও গোলার শব্দ পাওয়া গেছে বলে স্থানীয় ও জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। তবে এটি সীমা‌ন্তের ওপারে। সীমান্ত এলাকায় বি‌জি‌বি সবসময় সর্তক অবস্থায় আছে। প্রশাসনও এই বিষয়ে তৎপর রয়েছে।

এদিকে, সোমবার সকালে টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের খারাংগাগুনা ও উলুবনিয়া পাড়ায় ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছিল। ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেল বিস্ফোরণে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত রোহিঙ্গা মো. ইকবাল (১৭) নিহত হন। আহত হন পাঁচ জন। একই দিন দুপুরে সীমান্ত এলাকা থেকে গরু আনতে গিয়ে মাইন বিস্ফোরণে উইনু থোয়াইং তঞ্চঙ্গ্যার পায়ের নিম্নাংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের বাংলাদেশ অভ্যন্তরে মিয়ানমার থেকে ছোড়া একটি বুলেট এসে পড়ে। ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়ে। তার আগে ২৮ আগস্ট বিকাল ৩টার দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা একটি মর্টারশেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় ঘুমধুমের তুমব্রু উত্তর মসজিদের কাছে পড়ে। এসব ঘটনায় তুমব্রু সীমান্তের মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়, যা এখনও কাটেনি।

এ ছাড়া গত কয়েক দিনে কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দাদের কানেও আসছে মিয়ানমারের গোলাগুলির শব্দ। সেখানেও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।