৬ বছরেও শেষ হয়নি চবি ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ হত্যা মামলার তদন্ত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীকে হত্যার রহস্যজট ছয় বছরেও খোলেনি। এখনও মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বজনরা। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ঘটনার পর থেকে পরিবার ও তার অনুসারীরা দাবি করছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন নির্মাণ কাজের দরপত্র নিয়ে কোন্দলের সূত্র ধরে পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আবদুস সালাম মিয়া বলেন, ‘মামলাটি তদন্ত চলছে। কবে নাগাদ তদন্ত শেষ হবে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে তদন্তে অগ্রগতি আছে।’

দিয়াজের বড় বোন জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী নিপা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত ছয় বছর ধরে আমার ছোট ভাই দিয়াজ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি তদন্ত চলছে। কবে তদন্ত শেষ হবে তা তদন্ত সংস্থাও বলতে পারছে না। সিআইডিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হচ্ছে, কিন্তু মামলার অগ্রগতি হচ্ছে না। সিআইডি এই মামলা তদন্তে আন্তরিক না। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরছে। তাদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে না।’

২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট এলাকায় ভাড়া বাসার নিজ কক্ষ থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে হাটহাজারী থানা পুলিশ। পরদিন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। ওই বছরের ২৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে দেওয়া প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়। দিয়াজের পরিবার ওই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে।

এ ঘটনায় দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী ২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর ১০ জনকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, চবি ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি আলমগীর টিপু, ছাত্রলীগ নেতা আবুল মনসুর জামশেদ, তাদের অনুসারী রাশেদুল আলম জিশান, আবু তোরাব পরশ, মনসুর আলম, আবদুল মালেক, মিজানুর রহমান, আরিফুল হক অপু ও মোহাম্মদ আরমান।

পরে দিয়াজের মা জাহেদা আমিনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দিয়াজের লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের আদেশ দেন। ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বর লাশ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ। ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দিয়াজের শরীরে আঘাতজনিত জখমের মাধ্যমে হত্যার আলামত আছে।’