শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার, যুবক আটক

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে আবু বক্কর (৪) নামে এক শিশুর বস্তাবন্দি গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) রাত ১০টায় শহরের কান্দিপাড়া মাইমল হাটি মাসু মিয়ার বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। 

আবু বক্কর ওই এলাকার হাসান মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় সাব্বির নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

স্বজনরা জানান, শুক্রবার রাত ৮টার পর থেকে আবু বক্করকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ১০টার দিকে তাদের বাড়ির পাশের মাছু মিয়ার বাড়ির টিউবওয়েলের কাছে প্লাস্টিকের বস্তায় মোড়ানো অবস্থায় তার গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। রাত ৮টা থেকে ১০টার মধ্যেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে স্বজন ও এলাকাবাসীর দাবি। এই সময় বিদ্যুৎ ছিল না বলেও জানান তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক ইসলাম বলেন, ‌‘আমার পরিবারের লোকজন টিউবওয়েলের সামনে বস্তা দেখে আমাকে খবর দেয়। পরে আমিসহ এলাকার কয়েকজন এসে বস্তা খুলে দেখি আবু বক্করের লাশ। এর আগে সন্ধ্যা থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। বস্তা যখন রেখে গেছে তখন এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় যে বা যারা জড়িত আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

আবু বক্করের চাচা নুরুজ্জামান বলেন, ‘রাতে নিখোঁজের পর থেকে এলাকায় অনেক খোঁজাখুজি করেছি। রাতে ১০টার দিকে মাছু মিয়ার বাড়ির টিউবওয়েলের সামনে বস্তায় লাশ পাওয়া গেছে শুনে আমরা সেখানে যাই। পরে বস্তা খুলে দেখি আমার ভাতিজার লাশ। চার বছরের শিশুকে যেই হত্যা করেছে তার কঠিন শাস্তি চাই।’

নিহত শিশুর ফুফু হ্যাপী আক্তার বলেন, ‘আমার ভাইয়ের দুই ছেলে আমার সামনেই খেলা করছিল। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার আগে সে পাশেই তার দাদার বাড়িতে যায়। এরপর থেকে তার কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। রাতে তার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।’

আবু বক্করের বাবা হাসান মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলে আজকে কয়েক দিন ধরে ডিম সেদ্ধ দিয়ে পিঠা খাওয়ার বাইনা করছিল। ২০টি ডিম এনে তার মায়ের কাছে দিয়ে বলেছিলাম ডিমগুলো সেদ্ধ করতে দিতে। তখন আমার ছেলে বাসায় ছিল না। যখন জিজ্ঞাস করি আবু বক্কর কোথায়, তখন তার মা বলে, ছেলে দাদার বাড়িতে গিয়েছে। আমি সেখানে গিয়ে শুনি আমার ছেলে নেই। এরপর থেকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনও সন্ধান পাচ্ছিলাম না। এলাকার কারও সঙ্গে আমাদের কোনও শক্রতা নেই। কিন্তু কে এই কাজ করলো আমরা বুঝতে পারছি না। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, ‘আমরা শিশুটিকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তার গলায় কাটা দাগ রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সাব্বির নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তার কাছে রক্তমাখা ছুরি পাওয়া গেছে। সে পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। আজ (২৬ নভেম্বর) আদালতে তার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে।