রাতের আঁধারে হত্যা, খুনির রেখে যাওয়া গেঞ্জিতেই রহস্য উদ্ঘাটন

তিন ছিনতাইকারী মিলে ছুরিকাঘাতে খুন করেছে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কর্মী দুদু মিয়াকে (৩৮)। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া একটি গেঞ্জির সূত্র ধরে গ্রেফতার করা হয়েছে মো. ছোটন নামে এক ব্যক্তিকে।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) হত্যার দায় স্বীকার করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে সে। সেখানে হত্যার আদ্যোপান্ত বর্ণনা করেছেন ছোটন। এর আগে বুধবার রাতে উপজেলার টাইম বাজার এলাকা থেকে ছোটনকে গ্রেফতার করে বাঁশখালী থানা পুলিশ। থানার ওসি মো. কামাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত দুদু মিয়া কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানির বিক্রয়কর্মী হিসেবে বাঁশখালী উপজেলায় কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর এলাকায়। পরিবার নিয়ে থাকতেন বাঁশখালী চাম্বল স্কুল রোডের একটি ভাড়া বাসায়। গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার গন্ডামারা বাজারে মালামাল বিক্রির টাকা সংগ্রহ করে বাসায় ফেরার পথে গন্ডামারা ব্রিজ এলাকায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি কামাল উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ওই বিক্রয়কর্মী মালামাল বিক্রির টাকা নিয়ে উপজেলা সদরের বাসায় ফেরার সময় ছিনতাইকারীরা তার পথ আটকায়। এ সময় তার কাছে থাকা জিনিসপত্র ও টাকা ছিনতাইকারীরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এতে চিৎকার করতে থাকে দুদু মিয়া। এ সময় ছোটন তাকে ছুরিকাঘাত করে। আহত দুদু মিয়া ছোটনের পরনে থাকা গেঞ্জি ধরে রাখে। লোকজন এগিয়ে আসছে দেখে ছোটন গেঞ্জি খুলে পালিয়ে যায়।’

ওসি বলেন, ‘গেঞ্জিটা হত্যাকারীর হিসেবে আমরা সন্দেহ করি। এটি কার তা আমরা খোঁজ নেওয়া শুরু করি। গেঞ্জিটা ছোটনের জানতে পেরে তার সম্পর্কে খোঁজ খবর নিই। বুধবার উপজেলার টাইম বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গেঞ্জিটা তার বলে স্বীকার করে। ছিনতাই করতে গিয়ে বিক্রয়কর্মীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে সে। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতেও হত্যার দায় স্বীকার করেছে। ছোটন বলেছে, হত্যায় তার সঙ্গে আরও দুজন ছিল। মোট তিন জন মিলে খুন করেছে। বাকি দুজনকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।’